জাকির হোসেন হাওলাদার, দুমকী (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি:
জুলাই ২৪ গণঅভ্যুত্থানে নিহত শহীদ জসিম উদ্দিনের কন্যা এবং পটুয়াখালীর আলোচিত লামিয়া ধর্ষণ মামলার রায় ঘোষণা করা হবে আগামীকাল বুধবার (২২ অক্টোবর)। ইতোমধ্যে মামলার বাদী, সাক্ষী ও আসামি পক্ষের জেরা এবং যুক্তিতর্ক শেষে আদালত রায়ের তারিখ নির্ধারণ করেছেন। পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন এই মামলার রায়কে কেন্দ্র করে বাদী ও আসামি পক্ষের মধ্যে বিরাজ করছে তীব্র উৎকণ্ঠা। উভয় পক্ষই আদালতের ন্যায়বিচারের অপেক্ষায় দিন গুনছেন।
২০২৫ সালের ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় পটুয়াখালী জেলার দুমকি উপজেলার পাংগাশিয়া ইউনিয়নের নলদোয়ানি গ্রামের শহীদ মো. জসিম উদ্দিনের মেয়ে লামিয়া (১৮) পার্শ্ববর্তী আলগী গ্রামে নানা বাড়ি যাওয়ার পথে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন।
তিনি ছিলেন দুমকি সরকারি জনতা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী।ধর্ষণের পর অভিযুক্তরা ভুক্তভোগীর ছবি ধারণ করে এবং তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। পরের দিন সাহস করে লামিয়া নিজেই দুমকি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ প্রথমে অভিযুক্ত সাকিব মুন্সীকে আটক করে। পরবর্তীতে আরও দুই আসামি সিফাত মুন্সী ও কথিত প্রেমিক ইমরান মুন্সীকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করতে তাদের ডিএনএ টেস্ট করানো হয়।এরই মধ্যে ধর্ষণের মানসিক যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে ২৬ এপ্রিল লামিয়া ঢাকার শেখেরটেক এলাকার একটি ভাড়া বাসায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
পরে তার মরদেহ নিজ গ্রামে এনে শহীদ বাবার কবরের পাশে দাফন করা হয়।ভুক্তভোগীর মা মোসা. রুমা বেগম বলেন, “আমার মেয়ে অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছিল বলেই আজ তাকে হারাতে হলো। আমি আমার মেয়ের আত্মার শান্তির জন্য ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।”
মামলার পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, “আমরা আদালতে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে পেরেছি যে, লামিয়া ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন এবং আসামিরা এতে সরাসরি জড়িত ছিল। আমরা ন্যায়বিচারের প্রত্যাশা করছি।”
সংঘটিত এই চাঞ্চল্যকর মামলাটি নিয়ে জেলাব্যাপী ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। সমাজের সর্বস্তরের মানুষ আশা করছে আদালতের রায়ে জুলাই শহীদ কন্যা লামিয়া তার প্রাপ্য ন্যায়বিচার পাবেন এবং অপরাধীরা উপযুক্ত শাস্তি পাবে।।