নিজস্ব প্রতিনিধি:
জুলাই গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
বুধবার প্রকাশিত রায়ে বলা হয়েছে, আগামী ৩০ দিনের মধ্যে আপিল করতে চাইলে তাদের আত্মসমর্পণ করতে হবে। গত ১৭ নভেম্বর বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনাল-১ জনাকীর্ণ আদালতে এ রায় ঘোষণা করে।
একই মামলায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে এবং শেখ হাসিনা ও কামালের সব স্থাবর–অস্থাবর সম্পদ বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রায়ে ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনে নিহতদের পরিবারকে উল্লেখযোগ্য ক্ষতিপূরণ এবং আহতদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়। পলাতক থাকায় শেখ হাসিনা ও কামাল আপিলের সুযোগ পাচ্ছেন না।
আগস্টে ভারতে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে দণ্ড কার্যকরের দাবি জানিয়েছে জুলাই যোদ্ধারা। মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বাংলাদেশের কোনো সাবেক সরকারপ্রধানের বিরুদ্ধে এটি প্রথম মৃত্যুদণ্ডের রায়।
অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে উসকানি, হত্যার আদেশ, নিষ্ঠুরতা প্রতিরোধে ব্যর্থতা, মারণাস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশসহ চানখাঁরপুল ও আশুলিয়ায় ছয়জন করে মোট বারো জনকে হত্যার দায়।
রায়ে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, আন্দোলনরত ছাত্র–জনতাকে ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়া, ড্রোন–হেলিকপ্টার ব্যবহার করে হামলার নির্দেশ এবং বিভিন্ন অডিও–ভিডিও আলামতের মাধ্যমে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।
অন্যদিকে মামুনের স্বীকারোক্তি ও সত্য প্রকাশে সহযোগিতার কারণে তার সাজায় নমনীয়তা দেখানো হয়েছে। এই রায়কে দেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।