মো. সাইফুল ইসলাম, নীলফামারী প্রতিনিধি:
নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার উত্তর দেশীবাই ফয়জুল উলুম দাখিল মাদ্রাসা বন্ধ রেখে শিক্ষার্থীদের বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রংপুর বিভাগীয় মহাসমাবেশে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি স্থানীয়দের নজরে এলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও–ছবি ভাইরাল হয় এবং পুরো উপজেলার শিক্ষাঙ্গনে সৃষ্টি হয় চাঞ্চল্যের।
মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে মাদ্রাসায় গিয়ে দেখা যায়, ক্লাসরুম ও শিক্ষকদের কক্ষে তালা ঝুলছে। স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিনের মতো সকাল ৮টার আগেই শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মাদ্রাসায় এসেছিল। তবে কিছুক্ষণ পরই সবাই কোথায় যেন চলে যায়।
মাদ্রাসা–সংলগ্ন মসজিদের মোয়াজ্জিন আব্দুল কাদের জানান, “সকাল ৮টার সময় শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা মাদ্রাসায় এসেছিল। এরপর হঠাৎ সবাই কোথায় গেছে, তা জানি না।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন বলেন, উপজেলার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা চলছে। “শুনেছি মাদ্রাসার শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের নিয়ে জামায়াতের বিভাগীয় সমাবেশে গেছেন,”—এমন দাবি করেন তারা।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক সমাবেশে নেওয়ার বিষয়ে উপজেলার কয়েকটি দাখিল ও আলিম মাদ্রাসার প্রধান বলেন, এটি সম্পূর্ণ নিয়মবহির্ভূত। তারা জানান, পরীক্ষাকালীন সময়ে প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার কোনো বিধান নেই।
পরে সাংবাদিকরা বিষয়টি জানতে চাইলে মাদ্রাসায় উপস্থিত হওয়া সহকারী গণিত শিক্ষক আবু তালেব বলেন, তিনি মাদ্রাসা বন্ধের বিষয়ে কিছু জানেন না এবং এ বিষয়ে কোনো মন্তব্যও করতে চান না।
মাদ্রাসার সুপার মাওলানা সাইফুল ইসলামকে ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। বিষয়টি জানানো হলে মাদ্রাসার সভাপতি মাওলানা রাশেদুজ্জামান রাশেদ সাংবাদিকদের জানান, “আমি মাদ্রাসা বন্ধের বিষয়ে কিছু জানি না। সুপার আমাকে কিছুই বলেননি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে জানাব।”
এ ঘটনায় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) আশরাফ উজ্জামান সরকার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “রাজনৈতিক দল তো দূরের কথা, অনুমতি ছাড়া সরকারি অনুষ্ঠানেও কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা যায় না। বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিষ্ঠান প্রধানকে শোকজ করা হবে।”
ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক আলোচনা–সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। স্থানীয়রা শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা ও পরীক্ষার ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।