মো. সাইফুল ইসলাম, নীলফামারী প্রতিনিধি:
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর এ টি এম আজহারুল ইসলাম বলেছেন, স্বাধীনতার পর বিভিন্ন আদর্শের সরকার ক্ষমতায় এলেও দেশের মানুষের প্রত্যাশিত উন্নয়ন হয়নি।
তিনি বলেন, “৫৪ বছরে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ, জাতীয়তাবাদ কিংবা সমাজতন্ত্র মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারেনি। আমরা নৌকা দেখেছি, ধানের শীষ দেখেছি, লাঙ্গল দেখেছি— তারা নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করেছে, কিন্তু জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি।”
রোববার দুপুরে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার গাড়াগ্রাম ইউনিয়নের টেপারহাট এলাকায় ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে ঢেউটিন বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এ টি এম আজহারুল ইসলাম বলেন, জামায়াতে ইসলাম এককভাবে ক্ষমতায় যেতে চায় না। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে জনগণের শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় বিশ্বাসী জামায়াত আগামী জাতীয় নির্বাচনে ৮টি ইসলামী ও দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যৌথভাবে অংশ নিতে চায়। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই ঐক্য বজায় থাকলে নির্বাচনমাধ্যমে সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে “ইসলামী শাসন ব্যবস্থা” প্রতিষ্ঠিত হবে।
এ টি এম আজহারুল ইসলাম বলেন, “এতদিন দেশের মানুষকে স্বাধীনতার পক্ষ-বিপক্ষ— এভাবে দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। একটি জাতিকে বিভক্ত করে উন্নয়ন সম্ভব নয়। আমরা যে দলেই থাকি না কেন, আমরা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। বিভাজন নয়, ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের উন্নয়নে কাজ করতে হবে।”
দুর্গাপূজায় হামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অতীতে দুর্গাপূজা চলাকালে মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটলেও ২০২৫ সালে দেশের কোথাও এমন ঘটনা ঘটেনি। তিনি দাবি করেন, এর ফলে প্রমাণিত হয়েছে— যারা এসব হামলা করত তারা দেশ থেকে পালিয়ে গেছে এবং জনগণ শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পূজা উদযাপন করেছে।
কিশোরগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের উদ্যোগে আয়োজিত ঢেউটিন বিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা আমীর আব্দুর রশিদ শাহ্ এবং সঞ্চালনা করেন উপজেলা সেক্রেটারি ফেরদৌস আলম।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন— আব্দুর রশিদ, টিম সদস্য (রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চল) অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তার, জেলা আমীর ও নীলফামারী-১ (ডোমার-ডিমলা) আসনের প্রার্থী, হাফেজ মাওলানা আব্দুল মুনতাকিম, নীলফামারী-৪ (কিশোরগঞ্জ-সৈয়দপুর) আসনের প্রার্থী, ড. খাইরুল আনাম, জেলা নায়েবে আমীর, আখতারুজ্জামান বাদল, উপজেলা নায়েবে আমীর।
এছাড়া উপজেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি মনজুরুল ইসলাম রতন, সহকারী সেক্রেটারি রবিউল ইসলাম, শিব্বির আহমেদ, মাওলানা জাহিদুল ইসলাম, মাওলানা আফজালুল হকসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ৯০টি পরিবারকে পুনর্বাসনের অংশ হিসেবে প্রতিটি পরিবারে একটি করে ঢেউটিনের বান্ডিল প্রদান করা হয়।