মো সাইফুল ইসলাম, নীলফামারী প্রতিনিধি:
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নীলফামারীর রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরি করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। জেলার দুটি গুরুত্বপূর্ণ আসনে দলটি ঘোষণা করেছে দুইজন আলোচিত ও গ্রহণযোগ্য প্রার্থী। নীলফামারী–২ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন জনপ্রিয় চিকিৎসক ডা. মো. কামরুল ইসলাম এবং নীলফামারী–৩ (জলঢাকা) আসনে প্রার্থী হয়েছেন তরুণদের প্রিয় মুখ আবু সাঈদ লিওন। এই ঘোষণাকে ঘিরে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে তৈরি হয়েছে নতুন আলোচনার ঢেউ।
দীর্ঘদিন চিকিৎসা সেবায় যুক্ত থেকে মানুষের আস্থা অর্জন করা ডা. মো. কামরুল ইসলাম মনোনয়ন পাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় বলেন—
“আলহামদুলিল্লাহ, আমাকে মনোনীত করায় নীলফামারীবাসী, গোড়গ্রাম, হাজিগঞ্জ এবং এনসিপির সব অঙ্গসংগঠনের প্রতি কৃতজ্ঞ। উন্নয়ন ও জনগণের সেবাই হবে আমার মূল লক্ষ্য।”
তৃণমূল নেতাদের মতে, নীলফামারী–২ অঞ্চলে দীর্ঘদিন পর একজন শিক্ষিত, সৎ ও মানবসেবায় নিবেদিতপ্রাণ ব্যক্তির প্রার্থিতা স্থানীয় রাজনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তনের সম্ভাবনা তৈরি করেছে।
অন্যদিকে জলঢাকা অঞ্চলের তরুণ সমাজে জনপ্রিয় আবু সাঈদ লিওন বলেন—
“জলঢাকার মানুষই আমার শক্তি। প্রতিটি গ্রামের মানুষের কষ্ট আমি জানি। ক্ষমতার জন্য নয়—মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্যই রাজনীতি করি।”
শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, কৃষি ও কর্মসংস্থান তার অগ্রাধিকার—জানিয়ে তিনি বলেন, তরুণদের নেতৃত্বেই জলঢাকা নতুন উন্নয়নধারায় এগিয়ে যাবে। তার মনোনয়ন ঘোষণার পর থেকেই গ্রাম–মাঠ–হাটবাজারে চলছে ব্যাপক আলোচনা।
জেলার চারটি আসন সামনে রেখে এনসিপির জেলা আহ্বায়ক আব্দুল মজিদ বলেন—
“নীলফামারী আমাদের কাছে শুধু রাজনৈতিক ক্ষেত্র নয়—এটি জনগণের অধিকার ও উন্নয়নের প্ল্যাটফর্ম। আগামী নির্বাচনে নীলফামারী হবে এনসিপির অন্যতম শক্ত ঘাঁটি।”
তিনি জানান, শিক্ষা, কৃষি, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান ও সড়ক–যোগাযোগকে লক্ষ্য করে জেলা জুড়ে একটি সমন্বিত উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে দলটি। পাশাপাশি জনগণের মতামত ও প্রয়োজনকে প্রাধান্য দিয়ে দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক কাঠামো তৈরি করা হচ্ছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নীলফামারীতে এনসিপি এবার “নতুন সমীকরণ” তৈরি করছে। তরুণ নেতৃত্ব, উন্নয়নমুখী পরিকল্পনা, সুশাসন ও দুর্নীতিমুক্ত রাজনীতির অঙ্গীকার—এসব কারণে তরুণ ও নতুন ভোটারদের মধ্যে এনসিপির জনপ্রিয়তা বাড়ছে।
এনসিপির প্রতিশ্রুতিতে উঠে এসেছে— কৃষকবান্ধব নীতি, আধুনিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা, মানসম্মত শিক্ষা, যুবদের টেকসই কর্মসংস্থান, সড়ক–যোগাযোগ উন্নয়ন, দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন।
দলটির আশা—মানুষের সমস্যা, সংকট ও স্বপ্নকে সামনে রেখে কাজ করলেই নীলফামারীর রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা সম্ভব।
এনসিপির প্রার্থী ঘোষণার পর নীলফামারীর রাজনৈতিক মাঠে নতুন উত্তাপ বিরাজ করছে। নির্বাচন ঘনিয়ে এলে এই উত্তাপ আরও বাড়বে—এমনটাই মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। এখন নীলফামারীর মানুষের দৃষ্টি এনসিপির এই দুই প্রার্থীর দিকে—তারা কি পারবেন পরিবর্তনের বার্তা বাস্তবে রূপ দিতে? উত্তর দেবে সময়।