নিজস্ব প্রতিনিধি:
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলাকে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট বানচালের সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি দৃঢ় ভাষায় বলেন, “যে আঘাতই আসুক, কোনো শক্তিই আগামী নির্বাচন বানচাল করতে পারবে না।”
শুক্রবার রাতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় উপদেষ্টা পরিষদের একাধিক সদস্য এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক জরুরি বৈঠকে এসব কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হাদির ওপর হামলা অন্তর্বর্তী সরকারের সময়কালের সবচেয়ে উদ্বেগজনক ও ভয়াবহ ঘটনা। এটি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রার ওপর সরাসরি আঘাত এবং পরাজিত শক্তির পক্ষ থেকে রাষ্ট্রের অস্তিত্বকে চ্যালেঞ্জ করার দুঃসাহসী প্রচেষ্টা।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এ ধরনের সন্ত্রাসী হামলা যেকোনো মূল্যে প্রতিহত করা হবে এবং জনগণকে সঙ্গে নিয়ে শান্তিপূর্ণ, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করা হবে। হামলার পেছনে যারা পরিকল্পনাকারী এবং যারা সরাসরি জড়িত, তাদের দ্রুত গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন তিনি।
বৈঠকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়–বিষয়ক বিশেষ সহকারী সায়েদুর রহমান জানান, শরিফ ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থা এখনও অত্যন্ত সংকটাপন্ন এবং পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে হাদির চিকিৎসায় কোনো ধরনের ঘাটতি রাখা হবে না এবং সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিত করা হবে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা জানান, হামলাস্থল থেকে সিসিটিভি ফুটেজসহ গুরুত্বপূর্ণ আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে এবং সেগুলো বিশ্লেষণ চলছে। প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশ দেন, হামলাকারীরা যাতে কোনোভাবেই দেশ ত্যাগ করতে না পারে, সে জন্য সীমান্তে তাৎক্ষণিক ও কঠোর নজরদারি জোরদার করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে যারা সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন এবং যারা সম্ভাব্য টার্গেটে থাকতে পারেন, তাদের নিরাপত্তা বিশেষভাবে নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে নির্বাচনকালীন যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতিতে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে একটি বিশেষ হটলাইন চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং অপরাধীদের সম্ভাব্য আস্তানায় অভিযান জোরদারের কথাও বৈঠকে জানানো হয়।
এই জরুরি বৈঠকে আইন, স্বরাষ্ট্র, তথ্য, জ্বালানি, স্থানীয় সরকার, সংস্কৃতি ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাসহ সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। পাশাপাশি উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে শিগগিরই প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে আলোচনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।