২৯শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৯ই রজব, ১৪৪৭ হিজরি

হাদি হত্যা মামলা: সন্দেহভাজনদের ভারত পালানোর দাবি ডিএমপির, মেঘালয় পুলিশ ও বিএসএফের অস্বীকার

নিজস্ব প্রতিনিধি:

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ শরিফ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের প্রধান সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম ও আলমগীর শেখ ভারতে পালিয়েছেন—ঢাকা মহানগর পুলিশের এমন দাবি অস্বীকার করেছে ভারতের মেঘালয় পুলিশ ও সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। ঘটনার ১৬ দিন পর রোববার (২৮ ডিসেম্বর) বিষয়টি নিয়ে দুই পক্ষের বিপরীত বক্তব্য সামনে আসে।

রোববার দুপুরে হাদি হত্যা মামলার অগ্রগতি জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন্স) এস এন মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ফয়সাল ও আলমগীর ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে চলে গেছেন। তাঁর দাবি, মেঘালয় পুলিশের অনানুষ্ঠানিক তথ্য অনুযায়ী তাদের সহায়তাকারী হিসেবে পুত্তি ও সামি নামে দুজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। তিনি সন্দেহভাজনদের পালিয়ে যাওয়ার একটি সম্ভাব্য রুট বর্ণনাও তুলে ধরেন।

তবে কয়েক ঘণ্টা পর হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে মেঘালয় পুলিশের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশ পুলিশের সঙ্গে এ বিষয়ে কোনো ধরনের আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ হয়নি, কাউকে গ্রেপ্তারও করা হয়নি। একই অবস্থান জানায় বিএসএফও। সংস্থাটির মেঘালয় ফ্রন্টিয়ারের আইজি ওপি উপাধ্যায় বলেন, হালুয়াঘাট সেক্টর দিয়ে সীমান্ত পারের কোনো প্রমাণ নেই; ডিএমপির দাবি ‘ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর’।

ডিএমপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, গ্রেপ্তার ১১ জনের জিজ্ঞাসাবাদ ও তদন্তের বিশ্লেষণেই সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে এবং এ বিষয়ে দুই দেশের পুলিশ কাজ করছে। তবে এখনই সব তথ্য প্রকাশ করা সম্ভব নয় বলে জানানো হয়।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দাবি, হামলার পর সন্দেহভাজনরা ইচ্ছাকৃতভাবে ডিজিটাল ডিভাইস সচল রেখে লোকেশন বিভ্রান্তি তৈরি করেছিলেন। ঘটনাটিতে ব্যবহৃত মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন আলামত উদ্ধার করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত দুইটি পিস্তল, গুলি, সিসিটিভি ফুটেজ এবং প্রায় ২১৮ কোটি টাকার স্বাক্ষরিত চেকসহ উল্লেখযোগ্য আলামত জব্দের কথা জানিয়েছে পুলিশ। গ্রেপ্তার ১১ জনের মধ্যে কয়েকজন ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন এবং চারজন সাক্ষ্য দিয়েছেন।

এদিকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সচিবালয়ে বলেন, তদন্তের স্বার্থে সব তথ্য প্রকাশ করা যাচ্ছে না; দ্রুতই প্রকৃত ঘটনা ও জড়িতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করা হবে। ডিএমপি জানিয়েছে, মামলার তদন্ত শেষ পর্যায়ে এবং আগামী ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যেই অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে।

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top