নিজস্ব প্রতিনিধি:
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। মঙ্গলবার এক শোকবার্তায় তিনি বলেন, খালেদা জিয়া শুধু একটি রাজনৈতিক দলের নেত্রীই ছিলেন না, বরং বাংলাদেশের ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। তাঁর অবদান, দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রাম এবং জনগণের আবেগের জায়গা বিবেচনায় সরকার চলতি মাসে তাঁকে রাষ্ট্রের ‘অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ হিসেবে ঘোষণা করেছিল।
ড. ইউনূস বলেন, “খালেদা জিয়ার ইন্তেকালে জাতি তার এক মহান অভিভাবককে হারাল। তাঁর মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত ও মর্মাহত।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, গণতন্ত্র, বহুদলীয় রাজনীতি ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে তাঁর ভূমিকা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। “তাঁর আপসহীন নেতৃত্বের মাধ্যমে গণতন্ত্রহীন অবস্থা থেকে জাতি বারবার মুক্তির অনুপ্রেরণা পেয়েছে,”—বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকলেও জাতির কল্যাণে তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক পথচলা, গণমুখী নেতৃত্ব ও দৃঢ় মনোবল সবসময়ই পথ দেখিয়েছে। “তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন,”—যোগ করেন তিনি।
তিনি স্মরণ করেন, স্বামী সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর ১৯৮২ সালে গৃহবধূর জীবন থেকে রাজনীতিতে এসে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্ব স্বৈরশাসক এরশাদের পতনে বড় ভূমিকা রাখে। নারী শিক্ষার প্রসারে অবৈতনিক শিক্ষা ও উপবৃত্তি চালুর মতো সিদ্ধান্তকে তিনি দেশের উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে উল্লেখ করেন।
ড. ইউনূস বলেন, রাজনৈতিক সাফল্যের কারণেই খালেদা জিয়া প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন এবং মিথ্যা মামলায় কারাবন্দি থাকতে হয়েছে। “শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনামলে তিনি ছিলেন সংগ্রাম ও প্রতিরোধের প্রতীক,”—বলেন তিনি।
শোকবার্তায় প্রধান উপদেষ্টা মরহুমার পরিবারের সদস্য ও দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান এবং জাতিকে শান্ত ও ধৈর্য ধারণের আহ্বান জানিয়ে খালেদা জিয়ার মাগফিরাতের জন্য দোয়া করতে অনুরোধ করেন।