মোঃ হাসান আলী, বাঘাইছড়ি প্রতিনিধিঃ
রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলায় বেকারত্ব দূরীকরণ, দারিদ্র্য বিমোচন, শিক্ষার মানোন্নয়ন, আর্থ-কর্মসংস্থানসহ সার্বিক উন্নয়ন এর জন্য “বিশেষ প্রকল্প কর্মসূচীর” আওতায় ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে খাদ্যশস্য বরাদ্দ প্রদানের জন্য চেয়ারম্যান, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের অনুকূলে ২,৫৬৪ (দুই হাজার পাঁচশত চৌষট্টি) মে.টন চাল বরাদ্দ বিতরণের সরকারি মঞ্জুরি আদেশ জারি করা হয়। এ নিয়ে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। কারণ পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয় জেলা পরিষদের মাধ্যমে যে “বিশেষ প্রকল্প কর্মসূচী” বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে তাতে রয়েছে বিশাল এক বৈষম্য।
খাদ্যশস্য বরাদ্দ প্রদান এর তালিকা দেখতে ক্লিক করুন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিশেষ প্রকল্প কর্মসূচী
রাঙ্গামাটি জেলা ১০টি উপজেলা, ১২টি থানা, ২টি পৌরসভা, ৫০টি ইউনিয়ন, ১৫৯টি মৌজা, ১৩৪৭টি গ্রাম ও ১টি সংসদীয় আসন নিয়ে গঠিত। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত চট্টগ্রাম বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। পূর্ব রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান একসাথে একটি জেলা ছিল। ১৮৬০ সালের আগে এটি চট্টগ্রাম জেলার অংশ ছিল। ১৮৬০ সালে চট্টগ্রামকে ভেঙে পার্বত্য চট্টগ্রাম গঠন করে ব্রিটিশ সরকার।
১৯৮৪ সালে এরশাদ সরকারের আমলে পার্বত্য চট্টগ্রামকে ভেঙে খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান নামে নতুন দুটি জেলা গঠন করা হয় এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলা বাকি অংশ নিয়ে রাঙামাটি জেলা নামে পরিচিত হতে থাকে। রাঙ্গামাটি একটি পার্বত্য জেলা। এটি বাংলাদেশের বৃৃৃহত্তম জেলা। উপজেলার সংখ্যানুসারে রাঙ্গামাটি বাংলাদেশের একটি “এ” শ্রেণীভুক্ত জেলা।
২০২২ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী রাঙ্গামাটি জেলার মোট জনসংখ্যা ৬,৪৭,৫৮৭ জন। এদের মধ্যে চাকমা ৪২.৬%, বাঙালি ৪২.৪%, মারমা ৭.৯৩%, তঞ্চঙ্গ্যা ৪.৩১%, ত্রিপুরা ১.৯০% এবং অন্যান্য ০.৮১%। (তথ্যসূত্র উইকিপিডিয়া-২০২২) তালিকায় দেখা যায় “বিশেষ প্রকল্প কর্মসূচীর” ভুক্তভোগী মোট ১৩১ জনের মধ্যে ২২ জন বাঙালি যা শতকরা ১৬.৮০% এবং উপজাতি ১০৯ জন যা শতকরা ৮৩.২০%। এতেই বোঝা যায় যে পার্বত্য এলাকার বাঙ্গালিরা কতটা বৈষম্যের স্বীকার হচ্ছে। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পার হলেও পাহাড়ের বাঙ্গালিদের ভাগ্যের বদল হয়নি।
পার্বত্য অঞ্চলের বাঙ্গালিরা সরকারি সকল সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। এছাড়াও চাকরি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবেও পাহাড়ের বাঙ্গালীরা বছরের পর বছর অবহেলিত। এমনকি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ এবং সম্মানের চাকরি বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) এ পর্যন্ত উপজাতিরা পার্বত্য কোটা পায় অথচ পার্বত্য এলাকার বাঙ্গালীদের কোন কোটার ব্যবস্থা নাই। অভিযোগ উঠেছে পার্বত্য উপদেষ্টা জনাব সুপ্রদীপ চাকমা বিগত স্বৈরাচারী সরকারের দোসরদের সাথে নিয়ে সরকারি অনুদান হরিলুট করছে।