আন্তর্জাতিক নিউজ ডেস্ক:
ইসরাইলের সঙ্গে যেকোনো আলোচনার আগে গাজা উপত্যকায় মানবিক সহায়তা প্রবেশের অনুমতি দিতে হবে এবং গাজা ফিলিস্তিনের অবিচ্ছেদ্য অংশ—এটি বিক্রির কোনো বস্তু নয় বলে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন গাজার সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতা বাসেম নাঈম।
শুক্রবার সৌদি গণমাধ্যম আল-হাদাথ-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। একই সঙ্গে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার প্রস্তাব ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেন।
সাক্ষাৎকারে বাসেম নাঈম বলেন, “গাজা ফিলিস্তিনের অংশ এবং এটা কোনো বিক্রির জন্য পণ্য নয়।” তিনি আরও বলেন, ইসরাইলের সঙ্গে যে কোনো আলোচনার আগে গাজায় খাদ্য ও ওষুধসহ মানবিক সহায়তা প্রবেশের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হবে।
সম্প্রতি কাতারে এক ব্যবসায়িক সম্মেলনে ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও তার ‘গাজা রূপান্তর পরিকল্পনা’র কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে এখন আর রক্ষার মতো কিছু নেই।” ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে এই পরিকল্পনা প্রথম উপস্থাপন করেন ট্রাম্প, যা আন্তর্জাতিকভাবে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে। ফিলিস্তিনিরা, আরব দেশগুলো এবং জাতিসংঘ এই পরিকল্পনার তীব্র বিরোধিতা করে সতর্ক করে দেয় যে, এটি জাতিগত নির্মূলের দিকে নিয়ে যেতে পারে।
ট্রাম্পের পরিকল্পনার মধ্যে ছিল গাজার জনগণকে প্রতিবেশী দেশগুলোতে স্থানান্তরের প্রস্তাব, যা মিসর, জর্ডান ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে। তার সাম্প্রতিক মন্তব্য বিশ্বজুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের গাজা সংক্রান্ত অভিপ্রায় নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
এদিকে, দখলদার ইসরাইলি বাহিনী অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় তাদের ভয়াবহ হামলা অব্যাহত রেখেছে। বিমান, স্থল এবং সমুদ্রপথে চালানো এই হামলায় মাত্র একদিনেই ১৪৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর শুরু হওয়া যুদ্ধের পর থেকে গাজায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৩,১১৯ জনে। এছাড়া আহত হয়েছেন ১ লাখ ২০ হাজার মানুষ।
বাসেম নাঈমের দাবির সঙ্গে একমত হয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও গাজায় মানবিক সহায়তা নিশ্চিতের ওপর জোর দিচ্ছে। ইসরাইলি অবরোধ ও অব্যাহত হামলায় গাজার জনগণ চরম সংকটে রয়েছে। হামাস নেতা নাঈম বলেন, “মানবিক সহায়তা প্রবেশের পথ খুলে না দিলে গাজার জনগণের দুর্ভোগ আরও বাড়বে এবং সংকট দীর্ঘায়িত হবে।”
সূত্র: ইরনা