নিজস্ব প্রতিবেদক:
গাজা উপত্যকার বিভিন্ন এলাকায় ইসরাইলি বাহিনীর তীব্র বিমান হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ৭৬ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। হামলার সংখ্যা ও ভয়াবহতা বেড়ে যাওয়ায় নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
শনিবার (২৪ মে) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে এই তথ্য জানিয়েছে।
সবচেয়ে ভয়াবহ হামলার ঘটনা ঘটে জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে। একটি পরিবারের বাড়িতে চালানো হামলায় প্রায় ৫০ জনের মৃত্যু বা নিখোঁজ হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, “ইসরাইলি সেনারা যেন নিষ্ঠুর আনন্দে বেসামরিক মানুষ হত্যা করছে।”
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গাজার চলমান পরিস্থিতিকে এই সংঘাতের ‘সবচেয়ে নিষ্ঠুর অধ্যায়’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি জানান, “উত্তর গাজায় এখনো কোনো মানবিক সহায়তা পৌঁছায়নি এবং গোটা উপত্যকায় কেবলমাত্র সামান্য পরিমাণ ত্রাণ ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে।”
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ইসরাইলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৫৩ হাজার ৮২২ জন ফিলিস্তিনি, আহত হয়েছেন ১ লাখ ২২ হাজার ৩৮২ জন। তবে গাজার সরকার নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যম অফিস দাবি করছে, প্রকৃত সংখ্যাটি আরও বেশি—নিহতের সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০ ছাড়িয়েছে। অনেকেই এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন, যাদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নেতৃত্বে ইসরাইলে চালানো হামলায় ১ হাজার ১৩৯ জন নিহত হন এবং ২০০ জনেরও বেশি মানুষ জিম্মি করা হয়। ওই ঘটনার পর থেকেই গাজায় নজিরবিহীন প্রতিশোধমূলক হামলা চালিয়ে আসছে ইসরাইলি বাহিনী।
জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য বারবার আহ্বান জানালেও এখনো তা বাস্তব রূপ পায়নি। গাজায় প্রতিদিনের মৃত্যু, ধ্বংস আর মানবিক সংকট এখন পৃথিবীর অন্যতম ভয়াবহ ট্র্যাজেডিতে রূপ নিয়েছে।