১৭ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩রা আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২১শে জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি

বগুড়া আদমদীঘিতে টুংটাং শব্দে কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ত কামার কর্মকাররা

সজীব হাসান, (বগুড়া) প্রতিনিধি :

বছরের অন্য সময় অনেকটা অলস কাটালেও কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন আদমদীঘির কর্মকাররা। উপজেলার পৌর শহরের সান্তাহারের রথবাড়ি, নতুন বাজার, ঢাকা পটি, ছাতিয়ানগ্রাম, আদমদীঘি সদর এলাকার কামারেরা ছুরি, চাপাতি, দা, বটি, হাসুয়া, কুড়াল ইত্যাদি তৈরি করছেন। ক্রেতাদের চাহিদা পূরণ করতে কামার পরিবারগুলোর নারী ও শিশুরাও কাজে হাত লাগাচ্ছেন। বছরের ঈদের আগে এই সময়টাতে কামারদের আয় ভালো হয়।

এছাড়া উপজেলার চাঁপাপুর,কন্দুগ্রাম নশরৎপুর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ঈদকে সামনে রেখে কামাররা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করছেন তারা। নতুন বাজার এলাকায় ঢুকতেই চোখে পড়ল বাঁশের চার খুঁটির ওপর টিনের দোচালার নিচে একজন কামার হাপরের চেইন টেনে কয়লার আগুনে লোহা লাল করছে। তপ্ত লাল লোহায় হাতুড়ি পেটাতে পেটাতে সুবোল বোস বলেন, কোরবানি ঈদ এলেই আমাদের কাজের চাপ বেড়ে যায়। বছরের এই সময় আয় ভালোই হয়। সান্তাহারের রাধাকান্ত হাট এলাকার কামার অচিন্ত কুমার দীর্ঘদিন এই পেশায় আছেন। তার বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল মাংস কাটার অস্ত্র তৈরিতে ব্যস্ত তিনি। তার নিজের ছেলে হাপর টানিয়ে আগুন দিচ্ছেন। আরেক ছেলে বাবার সঙ্গে তপ্ত লোহায় হাতুড়ি পেটানোর কাজ করছেন।

কিছু দূরে অচিন্ত কুমারের স্ত্রী সাবিত্রি রানী তৈরি অস্ত্রে ধার দিচ্ছেন। পুরাতন দা, ছুরি শান দিতে এসেছেন তারাপুর গ্রামের বাবলু শেখ। তিনি বলেন, ১০০ টাকা দিয়ে দা, ছুরি শান দিয়ে নিলাম। এদের কাজের মান খুবই ভালো। ৩৫ বছর ধরে কর্মকার পেশায় আছেন কর্মকার আসলাম (৫৪)। সান্তাহার বিখ্যাত মাসুম স্মরণী জোড়া পুকুরের সড়কের পাশে রেলওয়ের একটি জায়গায় তার দোকান। বটি, ছুরি, দা, চাকু, বটিতে ধার দিয়ে দেয় সে। এছাড়া লোহা, এংগেল দিয়ে ছোট ছোট নানা উপকরণ তৈরি করে সে।

বর্তমানে ঈদের সময় কাক ডাকা ভোর থেকে রাত পর্যন্ত কাজ করে নিজের দোকানে সে। তার এক ছোট ভাইও কর্মকার। বাবার পেশা ধরে রেখেছেন তারা দুই ভাই। কর্মকার আসলাম জানান, বর্তমানে আধুনিক যুগে এই পেশার কাজ অনেক কমে গেছে। তবু ধৈর্য ধরে এই পেশা টাকে ধরে আছি। দুই ঈদে আয় হয় ভালই। সান্তাহার রাধাকান্ত হাটে ৩-৪ জন কর্মকার দীর্ঘদিন এই পেশায় আছেন। আজ মঙ্গলবার হাটের দিন গিয়ে দেথা গেল বিভিন্ন আইটেমের তার হাতে বানানো চুরি, দা, কাস্তে, চাকু বিছিয়ে বিক্রি করে ৩-৪ জন কর্মকার।

তারাও জানান, ঈদের এই সময়ে ব্যবসা ভাল হয়।কর্মকার অচিন্ত কুমার জানালেন, তাদের তৈরি মালামাল বিভিন্ন পাইকাররা ঢাকার কারওয়ান বাজারে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করে। তিনি আরও জানালেন, এখন বিভিন্ন এনজিও তাদের ব্যবসা করতে ঋণ দিচ্ছে। ঈদের এই সময়টাই আয় ভালো হয়।

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top