ইমতিয়াজ উদ্দিন, জবি প্রতিনিধি:
দেশের প্রান্তিক ও অনুন্নত এলাকার শিক্ষার্থীদের মাঝে বাস্তবজীবনভিত্তিক সচেতনতা ও প্রয়োজনীয় দক্ষতা ছড়িয়ে দিতে কাজ করছে তরুণদের গড়া সামাজিক সংগঠন ‘ভ্রাম্যমাণ বিদ্যাপীঠ’। পাঠ্যবইয়ের গণ্ডির বাইরে গিয়ে শিক্ষাকে জীবনের সঙ্গে যুক্ত করতেই তারা চালু করেছে ‘শিক্ষালোক’ নামের একটি বিশেষ প্রকল্প, যা ইতোমধ্যেই ঢাকা বিভাগের চারটি অঞ্চলের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রশংসনীয় কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।
২০২৪ সালের ২১ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের উদ্যোগেই প্রতিষ্ঠিত হয় ভ্রাম্যমাণ বিদ্যাপীঠ। প্রতিষ্ঠার অল্প সময়ের মধ্যেই সংগঠনটি ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর—এই চারটি অঞ্চলের ১৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষামূলক ও সচেতনতামূলক ওয়ার্কশপ আয়োজন করেছে। এ পর্যন্ত সংগঠনটির সঙ্গে কাজ করছেন প্রায় ২৫০ জন স্বেচ্ছাসেবক, যারা বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের মাঝে সচেতনতা বিস্তারে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
ভ্রাম্যমাণ বিদ্যাপীঠের প্রথম ফ্ল্যাগশিপ প্রোগ্রাম “শিক্ষালোক ১.০” প্রকল্পের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মাঝে চারটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তোলা হচ্ছে। প্রথমত, হিটওয়েভ সচেতনতা—জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তীব্র গরমে করণীয় বিষয়ে সচেতনতা ও শারীরিক সুরক্ষা নিয়ে দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়। দ্বিতীয়ত, ধর্ষণ প্রতিরোধ ও আত্মরক্ষা—নারী ও কিশোরীদের নিরাপত্তা, আত্মরক্ষার কৌশল এবং আইনি সহায়তা সম্পর্কে ধারণা প্রদান করা হয়। তৃতীয়ত, সাইবার বুলিং ও অনলাইন হ্যারাসমেন্ট সচেতনতা—ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে নিরাপদ থাকার উপায় ও অনলাইনে হেনস্তার বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করা হয়। এবং চতুর্থত, ক্যারিয়ার পরিকল্পনা ও দিকনির্দেশনা—শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ গঠনে প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা ও দক্ষতা অর্জনের বিষয়ে সহায়তা প্রদান করা হয়।
এই কর্মসূচির মাধ্যমে শুধু শিক্ষার্থীরাই উপকৃত হচ্ছেন না, বরং স্বেচ্ছাসেবকরাও নেতৃত্ব, টিম ম্যানেজমেন্ট, জনসম্পৃক্ততা ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা অর্জন করছেন, যা তাদের ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনের জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।
ভ্রাম্যমাণ বিদ্যাপীঠের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রশাসন পরিচালক মিয়াদ আহমেদ শুভ বলেন, “একটা দেশের হাজারটা সমস্যার উৎস ঐ দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা। দেশের প্রতিটি প্রান্তে শিশু, কিশোর-কিশোরী, যুবক-যুবতী, বৃদ্ধসহ সকল স্তরের মানুষের মধ্যে সত্যিকারের শিক্ষার আলো পৌঁছে দিতে আমাদের ভ্রাম্যমাণ বিদ্যাপীঠ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।” তিনি আরও জানান, “শিক্ষালোক নামটি শিক্ষার প্রকৃত আলোতে সকলকে আলোকিত করার প্রয়াসে রাখা হয়েছে। আমাদের সক্রিয় ও মেধাবী স্বেচ্ছাসেবকরা ইতোমধ্যেই ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন অঞ্চলে কার্যক্রম পরিচালনা করছে এবং আমরা দেশের অন্যান্য বিভাগেও এটি সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করছি।”