আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
গাজাগামী ত্রাণবাহী জাহাজ থেকে আটক সুইডিশ পরিবেশ আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ ইসরাইল ত্যাগ করেছেন। মঙ্গলবার ইসরাইলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, তিনি ফ্রান্স হয়ে সুইডেনগামী একটি ফ্লাইটে দেশ ছেড়েছেন। এ তথ্য এক্স (সাবেক টুইটার)-এ পোস্ট করে নিশ্চিত করে মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে থুনবার্গের বিমানে ওঠার দুটি ছবিও প্রকাশ করা হয়েছে।
ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জঁ-নোয়েল বাহো জানান, ‘ম্যাডলিন’ নামের জাহাজ থেকে গ্রেফতার হওয়া ছয় ফরাসি নাগরিকের মধ্যে পাঁচজন ইসরাইল ছাড়তে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তাদের আদালতের মাধ্যমে বিতাড়নের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। গ্রেফতার হওয়া একজন স্বেচ্ছায় দেশে ফিরতে সম্মত হয়েছেন।
জাহাজে আটক অন্যদের মধ্যে ছিলেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য রিমা হাসান। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের মুখপাত্র ডেলফিন কলার্ড জানান, সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইসরাইলি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছে পার্লামেন্ট প্রেসিডেন্টের কার্যালয়।
ইসরাইলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আগেই জানায়, যেসব অধিকারকর্মী দেশে ফিরে যাওয়ার কাগজে স্বাক্ষর করবেন না, তাদের আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জোর করে দেশে ফেরত পাঠানো হবে।
গ্রেটাসহ মোট ১২ জন অধিকারকর্মী গাজা অভিমুখী আন্তর্জাতিক ত্রাণ জাহাজ ‘ম্যাডলিন’-এ ছিলেন। ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন পরিচালিত জাহাজটি ইতালি থেকে যাত্রা শুরু করে, গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর উদ্দেশ্যে। তবে গত রোববার মধ্যরাতে আন্তর্জাতিক জলসীমায় জাহাজটি আটক করে ইসরাইলি নৌবাহিনী।
জাহাজে থাকা সহায়তার মধ্যে ছিল শিশু খাদ্য, চিকিৎসা সরঞ্জাম, ডায়াপার, চাল, ময়দা, স্যানিটারি পণ্য এবং পানি বিশুদ্ধকরণ কিট—যা গাজার যুদ্ধবিধ্বস্ত ও দুর্ভিক্ষ কবলিত মানুষের জন্য জরুরি ছিল।
গ্রেটা থুনবার্গ ছাড়াও এই অভিযানে অংশ নিয়েছিলেন জার্মানির ইয়াসেমিন আচার, ব্রাজিলের থিয়াগো আভিলা, তুরস্কের সুলাইব ওর্দু, স্পেনের সার্জিও তোরিবিও, ফ্রান্সের ব্যাপতিস্ত আন্দ্রে, পাস্কাল মৌরিয়েরাস, ইয়ানিস মোহামদি, ওমর ফায়াদ, রিভা ভিয়া, এবং নেদারল্যান্ডসের মার্কো ফন রেনেস।
প্রসঙ্গত, গত ২ মার্চ থেকে গাজায় ত্রাণ প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরাইল। ফলে অনাহারে ভুগে বহু শিশু মৃত্যুবরণ করেছে। এই অবস্থার প্রতিবাদ জানাতেই ফ্রিডম ফ্লোটিলা জাহাজ পাঠানো হয়েছিল। যদিও জাহাজ ও যাত্রীরা গাজা পৌঁছানোর আগেই ইসরাইলি বাহিনী তাদের আটক করে।