আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি অবরোধ ভাঙতে এবার সড়কপথে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে যাত্রা শুরু করেছে ‘অবিচলিত’ নামের একটি বিশাল বহর। তিউনিশিয়া থেকে যাত্রা শুরু করা এই মানবিক কনভয় ইতোমধ্যে লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলিতে পৌঁছেছে।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) বার্তা সংস্থা এপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, বহরটিতে অন্তত ১,৫০০ অধিকারকর্মী রয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই আলজেরিয়া, তিউনিশিয়া, মরক্কো এবং মৌরিতানিয়ার নাগরিক। লিবিয়া থেকেও অনেকে এই যাত্রায় যুক্ত হচ্ছেন।
এই বহরে শতাধিক গাড়ি ও ডজনখানেক বাস রয়েছে। কনভয়টি এখন লিবিয়ার জাউইয়া শহরের দিকে অগ্রসর হচ্ছে এবং সেখান থেকে মিশরের রাজধানী কায়রোর উদ্দেশে রওনা হওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। তাদের লক্ষ্য, কায়রো হয়ে গাজা সীমান্তবর্তী রাফা ক্রসিংয়ে পৌঁছানো।
ত্রিপোলিতে পৌঁছানোর পর কনভয়টিকে অভ্যর্থনা জানাতে রাস্তায় জড়ো হন হাজারো মানুষ। স্থানীয় পুলিশ তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
আলজেরীয় অধিকারকর্মী জামিলা শরিতাহ জানান, তিউনিশিয়া ও লিবিয়ার কর্তৃপক্ষ তাদের যাত্রায় সহযোগিতা করছে। অপর এক অংশগ্রহণকারী জায়েদ আল-হামামি বলেন, “আমাদের এই যাত্রার মূল উদ্দেশ্য হলো রাফা সীমান্ত পুনরায় খুলে দেওয়া এবং গাজায় জরুরি ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি নিশ্চিত করা।”
তবে বুধবার রাত পর্যন্ত কনভয়টি মিশরে প্রবেশ করতে পেরেছে কিনা, তা নিশ্চিত নয়। মিশরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গাজা সীমান্তবর্তী আরিশ শহর এবং রাফা ক্রসিংয়ে পৌঁছাতে হলে বিদেশি প্রতিনিধিদের পূর্বানুমতি নিতে হবে।
এদিকে, ইসরাইল এই কনভয়ের প্রবেশে বাধা দেওয়ার কৌশল নিচ্ছে। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ জানান, “এই বহর গাজায় প্রবেশ করতে পারবে না। কারণ এতে আমাদের বাহিনীর নিরাপত্তা হুমকিতে পড়বে।” ইসরাইল মিশরকেও এই কনভয় থামাতে আহ্বান জানিয়েছে।
এর আগে, আন্তর্জাতিক সংস্থা ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের ‘ম্যাডলিনা’ নামের একটি জাহাজ গ্রেটা থুনবার্গসহ ১২ অধিকারকর্মী নিয়ে ইতালি থেকে গাজার উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল। তবে গত সোমবার (৯ জুন) আন্তর্জাতিক জলসীমা থেকে জাহাজটি আটক করে ইসরাইলি নৌবাহিনী। পরে চারজনকে নিজ দেশে ফেরত পাঠালেও বাকিরা এখনো ইসরাইলে আটক রয়েছেন।
এই কনভয় নতুন করে বিশ্বজুড়ে গাজার মানবিক সংকট এবং অবরোধ ভাঙার প্রচেষ্টাকে কেন্দ্র করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে।