ইসরাইলি বিমান হামলায় তেমনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হলেও, গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের ‘টার্গেট কিলিং’ স্ট্রাইকে বড় ধাক্কা খেয়েছে ইরান। গত এক বছরে তেহরানের নাকের ডগায় বসেই ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছে মোসাদ। এমন জটিল অভিযানে ইরানের অভ্যন্তরে গোপন সহযোগিতা ছাড়া সফলতা সম্ভব নয় বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
ইতোমধ্যেই দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী অভ্যন্তরীণ বিশ্বাসঘাতকদের খোঁজে অভিযান চালিয়েছে এবং ইয়াজেদ শহর থেকে পাঁচজন ইসরাইলি গুপ্তচরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আলজাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, আটক ব্যক্তিরা দেশের সংবেদনশীল কৌশলগত স্থানে ছবি তুলে ও গোপন তথ্য সংগ্রহে যুক্ত ছিল।
এর মধ্যেই আরেক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে—ইরানের প্রতিবেশী জর্ডান হঠাৎ করেই একটি গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দর বন্ধ করে দিয়েছে। দ্য ক্র্যাডল জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ থেকে ইসরাইলে সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহের সুবিধার্থেই জর্ডান এই পদক্ষেপ নিয়েছে।
অথচ আনুষ্ঠানিকভাবে জর্ডান এ নিয়ে কিছু বলেনি। তবে সূত্রগুলো জানাচ্ছে, মার্কিন ও ইউরোপীয় সামরিক কার্গো বিমানগুলো জর্ডানের আকাশসীমা ব্যবহার করে ইসরাইলে অস্ত্র সরবরাহ করছে, এবং এসব চলাচল নির্বিঘ্ন করতে বিমানবন্দরটি বন্ধ রাখা হয়েছে।
ইসরাইলি হামলার পর ইরান দেশে নিরাপত্তা জোরদার করেছে। ‘জাতীয় গাদ্দারদের’ খোঁজে চালানো অভিযানে জানা যায়, আটক ব্যক্তিরা দীর্ঘদিন ধরে ইসরাইলের হয়ে কাজ করছিল। তাদের সঙ্গে দেশি ও আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্কের সম্পর্ক রয়েছে বলেও সন্দেহ করা হচ্ছে।
এদিকে, তেহরান, ইসফাহান এবং নাটাঞ্জে ইসরাইলি হামলার সময় জর্ডানের আকাশে অচেনা বিমানের গতিবিধি লক্ষ্য করা গেছে। জর্ডানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা পেট্রা জানায়, তারা ইরান থেকে ছোড়া কয়েকটি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করেছে, যা দেশের ভেতরে পড়ে সাধারণ মানুষের জন্য হুমকি হতে পারত।
মার্কিন থিঙ্কট্যাঙ্ক সেন্টার ফর আ নিউ আমেরিকান সিকিউরিটির বিশ্লেষক জোনাথন লর্ড মন্তব্য করেছেন, “জর্ডানের এই পদক্ষেপ প্রমাণ করে, তারা মার্কিন ও ইসরাইলি নিরাপত্তা কৌশলের ঘনিষ্ঠ শরিক।”
এই পরিস্থিতি ইরানকে তার সামরিক ও গোয়েন্দা নীতিমালায় নতুন করে ভাবতে বাধ্য করছে।