আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) কুদস ফোর্সের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইসমাইল কানি মঙ্গলবার (২৫ জুন) তেহরানে ‘বিজয় উৎসব’-এ সরাসরি অংশ নিয়ে তাঁর মৃত্যুর গুজবের অবসান ঘটিয়েছেন।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম তাসনিম নিউজ একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে যেখানে দেখা যায়, কানি রাজধানী তেহরানে ইসরাইলের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক ‘অপারেশন ডিভাইন ভিক্টরি’র সাফল্য উদযাপন করছেন হাজারো জনতার সঙ্গে। এই সামরিক অভিযানে ইসরায়েলের সামরিক ও কৌশলগত অবস্থান লক্ষ্য করে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছিল ইরান।
কানির ‘প্রত্যাবর্তন’ ও জনতার উচ্ছ্বাস
সরকারি চ্যানেল প্রেস টিভি জানিয়েছে, তেহরানের সমাবেশে কানি উপস্থিত হলে তাঁকে ঘিরে উচ্ছ্বসিত জনতা উষ্ণ অভ্যর্থনা জানায়। প্রেস টিভির ভাষায়, “আজ তেহরানে বিজয় উৎসবে আইআরজিসি কুদস ফোর্সের কমান্ডার ইসমাইল কানি সরাসরি অংশ নেন এবং জনগণের ভালবাসা ও সমর্থন পান।”
মৃত্যুর গুজবে ইতি
গত ১৩ জুন শুরু হওয়া ইসরাইলি বিমান হামলায় ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনাগুলো লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়। মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমস এক প্রতিবেদনে দাবি করেছিল, ওই হামলায় ইরানের একাধিক উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন, যাঁদের মধ্যে কানি-ও রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছিল।
তবে তাঁর তেহরান সমাবেশে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ প্রমাণ করে যে এই গুজব ভিত্তিহীন এবং তিনি জীবিত ও সক্রিয় অবস্থায় আছেন।
সংঘাত থেকে যুদ্ধবিরতি পর্যন্ত
ইসরায়েল অভিযোগ করেছিল, ইরান পারমাণবিক বোমা তৈরির দ্বারপ্রান্তে রয়েছে, যার জেরে তারা সামরিক হামলা শুরু করে। ইরান এই অভিযোগ বরাবরের মতোই অস্বীকার করে আসছে। ইসরায়েলের হামলার জবাবে ইরান চালায় পাল্টা ড্রোন ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, যার মাধ্যমে অধিকৃত বিভিন্ন অঞ্চলে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়।
এই টানা ১২ দিনের সংঘাতের পর যুক্তরাষ্ট্রও সরাসরি ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়। তবে শেষপর্যন্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একতরফাভাবে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন।
কানির উপস্থিতি: এক প্রতীকী বার্তা
বিজয় উৎসবে কুদস কমান্ডারের অংশগ্রহণ কেবলমাত্র মৃত্যু গুজব খণ্ডন করেই থেমে নেই, বরং এটি ইসরায়েল এবং যুক্তরাষ্ট্রকে দেওয়া একটি বার্তা—যুদ্ধক্ষেত্রে নেতৃত্ব এখনও অটুট, এবং প্রতিরোধের অবস্থান থেকে ইরান এক চুলও পিছু হটেনি।