২৯শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৪ঠা মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

ইউক্রেনের অভিযোগ: বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে ইইউকে অনুরোধ করবে জেলেনাস্কি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

ইউক্রেন সরকার বাংলাদেশের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছে। তাদের দাবি, বাংলাদেশের কিছু প্রতিষ্ঠান রাশিয়া-অধিকৃত ইউক্রেনীয় অঞ্চল থেকে গম আমদানি করছে, যা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের শামিল। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইউক্রেন ইতিমধ্যে বাংলাদেশ সরকারকে একাধিকবার সতর্ক করে চিঠি পাঠিয়েছে এবং এখন ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে নিষেধাজ্ঞার আবেদন করতে যাচ্ছে।

ইউক্রেনের পক্ষ থেকে প্রাপ্ত নথি অনুযায়ী, গত কয়েক মাসে রাশিয়ার কফকাজ বন্দর থেকে বাংলাদেশ ১.৫ লাখ টনের বেশি গম আমদানি করেছে। ইউক্রেন দাবি করছে, এই গমের একটি বড় অংশ তাদের অধিকৃত অঞ্চল থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চিঠিগুলোতে ইউক্রেন সংশ্লিষ্ট জাহাজের নাম, রেজিস্ট্রেশন নম্বর এবং যাত্রার সময়সূচির বিস্তারিত তথ্য দিয়েছে।

বাংলাদেশের খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি জানান, বাংলাদেশ শুধুমাত্র বৈধভাবে উৎপাদিত গমই আমদানি করে এবং রাশিয়া-অধিকৃত ইউক্রেনীয় অঞ্চলের গম ক্রয় করে না। তবে ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত ওলেক্সান্ডার পোলিশচুক দাবি করেছেন, রাশিয়া ইচ্ছাকৃতভাবে অধিকৃত অঞ্চলের গম নিজেদের গমের সঙ্গে মিশিয়ে রপ্তানি করছে, যাতে এর উৎস শনাক্ত করা কঠিন হয়।

এই ইস্যুতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি এখন বাংলাদেশের দিকে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইতিমধ্যে রাশিয়ার ৩৪২টি জাহাজে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, যেগুলোকে তারা ‘শ্যাডো নেভি’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। ইইউর মুখপাত্র জানিয়েছেন, যদি প্রমাণিত হয় যে বাংলাদেশ চুরি করা গম আমদানি করছে, তাহলে বাংলাদেশের বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা বিবেচনা করা হতে পারে।

বাণিজ্যিক দিক থেকে দেখলে, বাংলাদেশ রাশিয়ার গমের চতুর্থ বৃহত্তম ক্রেতা। ২০২৪ সালের মে মাসে রাশিয়া থেকে বাংলাদেশের গম আমদানির পরিমাণ ছিল উল্লেখযোগ্য। তবে এই বাণিজ্যিক সম্পর্ক এখন কূটনৈতিক সংকটে পরিণত হতে যাচ্ছে।

এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সরকারকে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে কাজ করতে হবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং খাদ্য মন্ত্রণালয়কে সমন্বিতভাবে এই ইস্যু মোকাবিলা করতে হবে। প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের আমন্ত্রণ জানিয়ে বাংলাদেশের গম আমদানি প্রক্রিয়া স্বচ্ছভাবে উপস্থাপন করা যেতে পারে। অন্যথায়, এই ইস্যু বাংলাদেশের জন্য বড় ধরনের কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে, বিশেষ করে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে।

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top