নিজস্ব প্রতিনিধি:
বৃহস্পতিবার সেনাসদরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সামরিক বাহিনী গুমের অভিযোগে জড়িত সদস্যদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। সামরিক অপারেশনস পরিদপ্তরের কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম জানান, প্রেষণে থাকা কিছু সেনাসদস্যের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ তদন্তাধীন রয়েছে। তিনি বলেন, “তদন্তে যদি তাদের সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হয়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।”
সংবাদ সম্মেলনে সাম্প্রতিক সহিংসতা ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। কর্নেল শফিকুল জানান, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে হেনস্তার ঘটনায় চিহ্নিত ৬ জনের মধ্যে একজনকে গ্রেফতার করে সেনাবাহিনী। তবে আদালত থেকে জামিন পেলে সেনাবাহিনীর আর কিছু করার থাকে না বলে তিনি উল্লেখ করেন।
চট্টগ্রামের পটিয়ায় সাম্প্রতিক সহিংসতা প্রসঙ্গে কর্নেল শফিকুল বলেন, সেনাবাহিনী দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে মহাসড়কের অবরোধ তুলে নেয় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সন্ত্রাস দমনে সাম্প্রতিক সাফল্যের হিসাব তুলে ধরে তিনি জানান, গত দুই সপ্তাহে সেনাবাহিনী ২৬টি অবৈধ অস্ত্র ও ১০০ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে। গত আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত ৯,৬৯২টি অবৈধ অস্ত্র ও ২,৮৬,৮৫৪টি গোলাবারুদ জব্দ করা হয়েছে। এ সময়ে ১৫,৬৪৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে কিশোর গ্যাং, তালিকাভুক্ত অপরাধী ও মাদক ব্যবসায়ী রয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রামের নিরাপত্তা পরিস্থিতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়ে কর্নেল শফিকুল বলেন, গত দুই সপ্তাহে সেনাবাহিনী ১৩টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারসহ ২৩ জন সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করেছে। ইউপিডিএফের একটি ক্যাম্প ধ্বংস করা হয়েছে। রাঙামাটিতে বিশেষ অভিযানকালে একজন সেনাসদস্য গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
তিনি আরও জানান, কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) ভয়ে পালিয়ে যাওয়া ১৩৮ জন বম উপজাতি সেনাবাহিনীর সহায়তায় নিজ বাড়িতে ফিরেছেন। গতকাল রাত থেকে চলমান অভিযানে কেএনএফের দুজন সদস্য নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে একজন ‘মেজর’ পদবীধারী কমান্ডার ছিলেন। এ সময় ৩টি এসএমজি, ১টি চায়নিজ রাইফেল ও ৩৬৪টি গুলিসহ নানা সামরিক সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।
সেনাবাহিনীর এই ব্রিফিংয়ে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, তারা যে কোনো ধরনের সহিংসতা ও অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান বজায় রাখবে এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাবে।