আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
গাজার তুফ্ফাহ এলাকায় ইয়াফা স্কুলের ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়ার পর থেকেই এলাকাটি নিস্তব্ধ। রাতের ইসরাইলি বিমান হামলায় স্কুল ও আশ্রয়প্রার্থী পরিবারগুলোর তাঁবু সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। এমতাবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাস।
শুক্রবার হামাসের এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, তারা কাতার ও মিশরের মাধ্যমে মার্কিন প্রস্তাবের প্রতি ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে এবং আলোচনার জন্য প্রস্তুত। হামাসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আমরা অবিলম্বে আলোচনা শুরু করতে প্রস্তুত, যাতে গাজায় ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর আগ্রাসন বন্ধ হয়।” প্রস্তাবিত চুক্তিতে জিম্মিদের মুক্তি ও সংঘাতের স্থায়ী সমাধান নিয়ে আলোচনার বিষয় রয়েছে।
তবে যুদ্ধবিরতি আলোচনা চললেও গাজায় ইসরাইলি হামলা অব্যাহত রয়েছে। শুক্রবার গাজা সিটির আল-সাবরা গার্লস স্কুল ও আল-হুররিয়া স্কুলে ড্রোন হামলায় বহু নিহতের খবর পাওয়া গেছে। খান ইউনিস ও জাবালিয়াতেও বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। রাফায় আইসিআরসি ফিল্ড হাসপাতালের এক স্বাস্থ্যকর্মী গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় রেড ক্রস জানিয়েছে, “এটি গাজায় প্রতিদিনের করুণ বাস্তবতা।”
জাতিসংঘের তথ্যমতে, ইসরাইল গাজার ৮৫% এলাকাকে সামরিক অঞ্চল ঘোষণা করেছে, যার ফলে গত চার মাসে ৭ লাখ ১৪ হাজার মানুষ গৃহহীন হয়েছেন। জ্বালানি সংকটের কারণে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ধ্বংসের মুখে, নাসের হাসপাতাল এখন একটি বিশাল ট্রমা ওয়ার্ডে পরিণত হয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরের হিসাবে, ত্রাণকেন্দ্রের আশেপাশে ইসরাইলি হামলায় ৬১৩ জন নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই শিশু ও তরুণ।
এদিকে ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবকে ইতিবাচকভাবে দেখলেও স্থানীয় বাসিন্দারা সতর্ক থাকছেন। এক স্কুলশিক্ষক জানান, “আমরা শুধু শান্তি চাই, কিন্তু ইসরাইলের আচরণে আমাদের আস্থা নেই।” বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই আলোচনা গাজার মানবিক সংকট নিরসনে একটি সম্ভাবনার দরজা খুললেও স্থায়ী শান্তির পথ এখনও অনিশ্চিত।