তরফদার মামুন, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
মানুষের সেবায় মানবিকতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করল মৌলভীবাজার বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতাল। সেবা যে শুধুমাত্র একটি পেশা নয়, বরং এটি এক মহান দায়িত্ব ও নিঃস্বার্থ অঙ্গীকার — তা আবারও প্রমাণিত হলো এই উদ্যোগের মাধ্যমে।
১২ জুলাই হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার ইমামবাড়ী টাইটেল মাদ্রাসায় আয়োজিত হয় ফ্রি চক্ষু চিকিৎসা ক্যাম্প। ক্যাম্পে উপস্থিত হন এলাকার শত শত চক্ষু রোগী, যারা দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসার সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন।
দিনব্যাপী এই বিশেষ আয়োজনে চারশতাধিক রোগী বিনামূল্যে চক্ষু পরীক্ষা এবং চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করেন। প্রাথমিক স্ক্রিনিংয়ে ৪০ জন রোগীর চোখে ছানি (Cataract) ধরা পড়ে। পরে তাদের মৌলভীবাজার বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে আধুনিক পদ্ধতিতে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে অপারেশনের মাধ্যমে লেন্স প্রতিস্থাপন করা হয়।
এই মানবিক এবং জটিল অপারেশন কার্যক্রমের নেতৃত্ব দেন হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট ও গ্লোকোমা বিশেষজ্ঞ ডা. আল-আমিন। তার দক্ষ তত্ত্বাবধানে রোগীদের চোখে নতুন দৃষ্টি ফিরিয়ে আনা হয়।
অপারেশন শেষে রোগীদের চোখে-মুখে ফুটে ওঠে আনন্দ আর কৃতজ্ঞতার ছাপ। নতুনভাবে পৃথিবীকে দেখতে পেয়ে তাদের জীবন যেন নতুন আলোয় ভরে ওঠে। অনেকে আবেগভরা কণ্ঠে বলেন, ‘‘ভাবতেও পারিনি এমনভাবে বিনামূল্যে চিকিৎসা পাব। আজ আবার জীবনের রং নতুন করে দেখতে পারছি।’’
এই চক্ষু ক্যাম্প শুধু একটি চিকিৎসা উদ্যোগ নয়, বরং মানবিক সহমর্মিতার এক অনন্য উদাহরণ। সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জীবনে আলোর সুবাতাস বইয়ে দিতে এ ধরনের উদ্যোগ সমাজের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মৌলভীবাজার বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতালের এই প্রচেষ্টা প্রমাণ করে, সেবার হাত যত বিস্তৃত হয়, সমাজ তত বেশি আলোকিত হয়।
অপারেশন শেষে রোগীদের নিয়ে তোলা ছবিটি এই মানবিক অভিযাত্রার এক জীবন্ত সাক্ষ্য হয়ে থাকবে।
মৌলভীবাজার বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতালের সাধারণ সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিক আব্দুল হামিদ (মাহবুব) রহমান বলেন,
মানুষের চোখে আলো ফেরানো শুধু একটি চিকিৎসা কার্যক্রম নয়, এটি মানুষের জীবনে নতুন আশা, নতুন স্বপ্নের আলো জ্বালানোর প্রয়াস। আমাদের বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতালের এই সেবামূলক উদ্যোগ চলমান থাকবে।
যতদিন সমাজে অন্ধকারে থাকা একটি মানুষও থাকবে, ততদিন আমাদের এ লড়াই, এই মানবিক প্রচেষ্টা থামবে না। মানুষের হাসি, তাদের চোখের আনন্দই আমাদের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।’’