মোছাঃ মাহমুদা আক্তার নাঈমা, জাককানইবি প্রতিনিধি:
২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘জুলাই স্মরণ’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই ২০২৫) সকালে পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের কনফারেন্স কক্ষে এই আলোচনা সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।শুরুতে শহিদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মুক্তি মো. আব্দুল হাকীম। জাতীয় সংগীত পরিবেশনের পর মূল আলোচনা শুরু হয়।আলোচনা সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “৫ আগস্টের পর আমরা স্বাধীনভাবে কথা বলতে ও কাজ করতে পারছি। এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনিয়ম, দুর্নীতি ও বৈষম্য দূর করতে কাজ করে যাচ্ছি। যারা বঞ্চিত হয়েছে, তাদের অধিকাংশের অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছি। তবে যারা জুলাই আন্দোলনে বাধা দিয়েছে এবং আন্দোলনকারীদের নির্যাতন করেছে, তাদের বিচার করতে হলে স্বাক্ষ্য, প্রমাণ, ফাইল ও ফুটেজ প্রয়োজন। যাদের তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে, তাদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আর যাদের প্রমাণ মেলেনি, তদন্তে সহযোগিতা করতে তোমাদের কাছে কোনো তথ্য থাকলে সরবরাহ করার আহ্বান জানাই।”
তিনি আরও বলেন, “৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের পর গত ৫৫ বছরে জুলাই স্পিরিটের মতো ঐক্য আর দেখা যায়নি। এই স্পিরিট আর কখনও বিলুপ্ত হবে না। ভবিষ্যতে কোনো সরকার অন্যায় করে বেশিদিন টিকে থাকতে পারবে না।’ আন্দোলনে নিজের অংশগ্রহণের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, “৫ আগস্ট ভোরবেলায় কারফিউ ভেঙে, বৃষ্টিতে ভিজে প্রথমে শহিদ মিনার এবং পরে রাজু ভাস্কর্যে গিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে আন্দোলনে শরিক হই।”
পাশাপাশি ছাত্র সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে উপাচার্য বলেন, “শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে আমরা একটি কমিটি গঠন করেছি। ইতিমধ্যে কমিটি কয়েকটি সভা করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় আইনে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকায় অন্তবর্তী সরকারের সময় নির্বাচন বিষয়ে কমিটি কাজ করছে।”
সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন লোকপ্রশাসন ও সরকার পরিচালনাবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও কমিটির সদস্য-সচিব মো. অলি উল্লাহ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন পরিচালক (ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা) ড. মো. আশরাফুল আলম। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জুলাই গণঅভ্যুত্থান উদ্যাপন কমিটির আহ্বায়ক ও কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইমদাদুল হুদা। বিশেষ অতিথি ছিলেন ট্রেজারার অধ্যাপক ড. জয়নুল আবেদীন সিদ্দিকী, সিন্ডিকেট সদস্য এম জাকির হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এ এইচ এম কামাল,আইন অনুষদের ডিন মুহাম্মদ ইরফান আজিজ, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. বখতিয়ার উদ্দিন, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সাখাওয়াত হোসেন সরকার, চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ এমদাদুর রাশেদ এবং রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান।এছাড়াও আরো উপস্থিত ছিলেন প্রক্টর ড. মো. মাহবুবুর রহমানসহ শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
উক্ত আলোচনা সভায় আহত শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও সাংবাদিকরা জুলাই আন্দোলনে তাদের অভিজ্ঞতার কথাও ব্যক্ত করেন