নিজস্ব প্রতিনিধি:
আজ ৫ আগস্ট, ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস। গত বছরের এই দিনে ছাত্র-শ্রমিক-জনতার সম্মিলিত আন্দোলনের মুখে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান, যার মাধ্যমে বাংলাদেশে টানা ১৬ বছরের স্বৈরাচারী শাসনের অবসান ঘটে। সরকারি স্বীকৃতিপ্রাপ্ত এই দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন। প্রধান উপদেষ্টা আজ বিকাল ৫টায় জাতীয় সংসদ দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করবেন।
গত বছর ১ জুলাই কোটা সংস্কারের দাবিতে শুরু হওয়া আন্দোলন দ্রুত গণআন্দোলনে রূপ নেয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলি, গণগ্রেফতার ও সরকারি দলের হামলার মুখেও আন্দোলন জোরদার হয়। ৫ আগস্ট লাখো মানুষের গণভবন অভিমুখী মিছিলের মুখে কারফিউ ভেঙে যায় এবং শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশত্যাগ করেন। পরদিন ৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করেন, যা মাত্র ছয় মাস আগে ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি গঠিত হয়েছিল।
জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনারের রিপোর্ট অনুযায়ী, আন্দোলন দমাতে সরকারি বাহিনীর হাতে ১,৪০০ জন নিহত হন, যার মধ্যে ১১৮ জন শিশু ছিল। আহত হন প্রায় ১২ হাজার মানুষ।
রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থান ছিল দীর্ঘদিনের বঞ্চনা, দুর্নীতি ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে জনতার বিস্ফোরণ। শহীদদের আত্মত্যাগের মাধ্যমে আমরা যে সুযোগ পেয়েছি, তা কাজে লাগিয়ে একটি ন্যায়ভিত্তিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।”
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেন, “হাজারো শহীদের রক্তে অর্জিত এই বিজয় রক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমরা একটি দুর্নীতিমুক্ত, সাম্যভিত্তিক বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেছি।”
দিবসটি উপলক্ষে বিএনপি আজ ও আগামীকাল দেশব্যাপী বিজয় র্যালি, জামায়াতে ইসলামী মহাখালীতে গণমিছিল এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বায়তুল মোকাররমে দিনব্যাপী কর্মসূচি পালন করবে। বাম গণতান্ত্রিক জোট জাতীয় প্রেস ক্লাবে সমাবেশের আয়োজন করেছে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে, যা দেশকে স্বৈরাচারমুক্ত করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের পথ প্রশস্ত করেছে।