নিজস্ব প্রতিনিধি:
সিলেটের ভোলাগঞ্জে কোটি কোটি টাকার সাদাপাথর লুটের ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে তীব্র সমালোচনার পর জেলা প্রশাসক শের মাহবুব মুরাদ ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আজিজুন্নাহারকে বদলি করা হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় বিভাগীয় কমিশনারের স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যেখানে নতুন জেলা প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন মো. সারওয়ার আলম এবং নতুন ইউএনও হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম।
এই কেলেঙ্কারিতে আইনজীবী ও পরিবেশবিদরা প্রশ্ন তুলেছেন, রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষায় দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর ভূমিকা নিয়ে। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির সিলেট সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট শাহ শাহেদা আক্তার অভিযোগ করেন, “মামলায় প্রকৃত দায়িত্বশীলদের রেহাই দেওয়া হয়েছে এবং ক্ষয়ক্ষতি ইচ্ছাকৃতভাবে কম দেখানো হয়েছে।” পরিবেশবাদী সংগঠন ধরিত্রী রক্ষায় আমরার সিলেট জেলা সচিব আব্দুল করিম চৌধুরী বলেন, “পাথরের পাশাপাশি পরিবেশ ও পর্যটন খাতের যে বিশাল ক্ষতি হয়েছে, তার দায় কে নেবে?”
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ইউএনও আজিজুন্নাহার যুবদলের এক নেতার সাথে ঘনিষ্ঠতা গড়ে তোলায় পাথর লুটে প্রশাসনিক নিষ্ক্রিয়তা দেখা দেয়। অভিযোগ রয়েছে, এই নেতা মাসোহারা আদায় করে ইউএনওকে নিষ্ক্রিয় রাখেন। গত রোববার পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রেজওয়ানা হাসানও প্রশাসনের যোগসাজশের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন।
খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরোর মহাপরিচালক আনোয়ারুল হাবীব ১৫ আগস্ট অজ্ঞাত ১,৫০০-২,০০০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করলেও আইনজ্ঞ এমাদ উল্লাহ শহীদুল ইসলাম দাবি করেন, “প্রকৃত অপরাধীদের রক্ষা করতে খনিজ ব্যুরো, পরিবেশ অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসনের দায়িত্ব এড়ানো হয়েছে।”
বর্তমানে হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী লুট হওয়া কিছু পাথর ফেরত আনার চেষ্টা চললেও, সিলেটবাসীর প্রশ্ন – রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষায় স্তরে স্তরে দায়িত্বপ্রাপ্তরা কী করছিলেন? বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই কেলেঙ্কারি রাষ্ট্রীয় সম্পদ ব্যবস্থাপনায় গভীর সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে।