নিজস্ব প্রতিনিধি:
সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের শুনানির প্রথম দিনেই নির্বাচন কমিশনে (ইসি) মারামারির ঘটনায় উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে। রোববার ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও ৩ আসনের সীমানা নিয়ে শুনানি চলাকালে বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার সমর্থকদের সঙ্গে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির একাংশ এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির নেতাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিনসহ পুরো কমিশনের সামনেই এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পর একে অপরকে দায়ী করে বিবৃতি দিয়েছে উভয় পক্ষ। এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মো. আতাউল্লাহ অভিযোগ করেন, “ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা আমাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়েছেন। তার গুন্ডাবাহিনী নিয়ে টেনেহিঁচড়ে আমাকে পায়ের নিচে ফুটবলের মতো লাথি মেরেছে।” তিনি সিইসির সামনে এমন “ন্যক্কারজনক” ঘটনার বিচার দাবি করেন।
অন্যদিকে, ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা ঘটনার দায়ভার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির একাংশের ওপর চাপিয়ে দিয়ে বলেন, “ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩-এর যিনি প্রার্থী, তিনি তার সদলবলে ২০/২৫ জন মিলে গুন্ডাপান্ডার মতো আচরণ করেছেন।” তিনি আরও যোগ করেন, “যেই বিএনপির নেতাকর্মীদের জন্য গত ১৫ বছর লড়াই করলাম, তারা আমাকে এখন ধাক্কা দেয়।”
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামল সংঘর্ষটি রুমিন ফারহানা ও এনসিপি নেতাদের মধ্যে ঘটেছে বলে নিশ্চিত করেন এবং এটিকে “দুঃখজনক” বলে অভিহিত করেন।
খসড়া সংসদীয় সীমানায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের বিজয়নগর উপজেলার তিনটি ইউনিয়নকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা নিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে তীব্র আপত্তি রয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের বিপক্ষে ৫টি এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের বিপক্ষে ১২৪টি আবেদন জমা পড়েছে।
ঘটনার পর ইসি হলরুমে দুই পক্ষকে আলাদা স্থান বরাদ্দ করে এবং বাকি শুনানি শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়। তবে ইসি ভবনের বাইরেও সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে, যার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশকে কয়েকজনকে আটক করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হয়।
এ ঘটনায় এনসিপি ইসিতে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে এবং রুমিন ফারহানার বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনে চিঠি দেয়। অন্যদিকে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রুমিন ফারহানার সমর্থকরা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।
সীমানা পুনর্নির্ধারণ সংক্রান্ত শুনানি আগামী কয়েকদিন ধরে চলবে বলে预期 করা হচ্ছে, তবে প্রথম দিনের এই ঘটনা নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে নতুন উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।