আবু রায়হান, রাজশাহী প্রতিনিধি :
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আবারও পরীক্ষার বিভিন্ন খাতে ফি বাড়িয়েছে। এতে দেশের প্রায় সব কলেজের শিক্ষার্থীরা নতুন করে আর্থিক চাপে পড়েছেন। রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থীরাও এর ব্যতিক্রম নয়।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কলেজটির অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের কাছে স্মারকলিপি দেন ফরম পূরণ ও সেশন চার্জ কমানোর দাবি জানিয়েছেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিটি খাতেই বাড়তি টাকা যোগ করেছে। তত্ত্বীয় পূর্ণপত্রে ১০০ টাকা, অর্ধপত্রে ৫০ টাকা, ব্যবহারিক খাতে ১০০ টাকা, ইনকোর্স পরীক্ষার জন্য ৩০০ টাকা, কেন্দ্রের ফি ১৫০ টাকা ও অকৃতকার্যদের জন্য অতিরিক্ত ১০০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই বাড়তি ফি আসল টাকার সঙ্গে যোগ হওয়ায় শিক্ষার্থীদের মোট ব্যয়ভার কয়েক গুণ বেড়ে গেছে।
রাজশাহী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সুমন বলেন, ‘আমাদের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষার ফরম পূরণের সময় এসেছে। কিন্তু এত বেশি ফি নির্ধারণ করা হয়েছে যে আমাদের পক্ষে দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে। তাই আমরা অধ্যক্ষ স্যারের কাছে তিন দফা দাবিসংবলিত একটি স্মারকলিপি দিয়েছি। যদি দ্রুত সমাধান না হয় তবে আমরা অবস্থান কর্মসূচি নিতে বাধ্য হব।’
শিক্ষার্থীদের উল্লেখিত ৩ দফা দাবিগুলো হলো প্রথমত ফরম ফিলাপ চার্জ যুক্তিসংগত পর্যায়ে নামিয়ে আনা। দ্বিতীয়ত সেশন চার্জ কমিয়ে শিক্ষার্থীবান্ধব হার নির্ধারণ। এবং সর্বশেষ আর্থিকভাবে অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থা করা।
অন্য এক শিক্ষার্থী মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা অনেকেই টিউশনি করে পড়াশোনার খরচ চালাই। কিন্তু এখন ফরম পূরণের জন্য কয়েক হাজার টাকা দিতে হচ্ছে। পরিবার থেকে টাকা জোগাড় করা দুঃসাধ্য হয়ে যাচ্ছে। অনেকের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।’
কলেজের শিক্ষার্থীরা জানান, দাবিগুলো মানা না হলে তারা বৃহত্তর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবেন। ফলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
রাজশাহী কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রুহুল আমিন বলেন, ‘আমাদের দাবিগুলো মেনে না নিলে এবং এর একটি সঠিক ব্যবস্থা না করলে আমরা আন্দোলন করতে বাধ্য হব।’
এ বিষয়ে রাজশাহী কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. যহুর আলী বলেন, ‘ফরম ফি ও সেশন চার্জ মূলত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যালয় থেকে নির্ধারিত হয়। আমাদের কলেজ কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে সরাসরি সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। তবে শিক্ষার্থীদের দাবি আমরা গুরুত্বসহকারে দেখছি। দ্রুত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে এবং সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের জানানো হবে।