আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ভুটান ও মিয়ানমার ছাড়া বাংলাদেশ, চীনসহ পাঁচ প্রতিবেশী দেশকে নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করেছে ভারত। পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় চলমান ‘কম্বাইন্ড কমান্ডারস কনফারেন্সে’ ভারতের নিরাপত্তা মহল জানিয়েছে, বাংলাদেশের তথাকথিত ‘উগ্রপন্থি তৎপরতার উত্থান’, পাকিস্তানের ‘জঙ্গি অর্থায়ন’, চীনের সঙ্গে সীমান্ত অচলাবস্থা এবং নেপালের রাজনৈতিক অস্থিরতা ভারতের জন্য বড় ধরনের সংকট হিসেবে দেখা হচ্ছে।
সোমবার কলকাতার ইস্টার্ন কমান্ড সদর দপ্তরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তিন দিনব্যাপী এ দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। এ বছরের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘ইয়ার অব রিফর্মস-ট্রান্সফরমিং ফর দ্য ফিউচার’। ভারতের সর্বোচ্চ পর্যায়ের এ ফোরামে রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্ব একসঙ্গে বসে প্রতিরক্ষা প্রস্তুতির রূপরেখা ঠিক করে।
ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশ, নেপাল ও পাকিস্তানের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি ভারতের জন্য নতুন নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। তিনি বলেন, এসব দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা ও ভারতবিরোধী মনোভাব আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। চীনের আক্রমণাত্মক অবস্থান এবং লাদাখ, অরুণাচল ও সিকিম সীমান্তে দীর্ঘদিনের অচলাবস্থা ভারতের জন্য পরোক্ষ হুমকি সৃষ্টি করছে।
তিনি আরও জানান, সম্মেলনের মূল লক্ষ্য ভারতের সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার করা এবং পাকিস্তান ও চীন—এই দুই দিক থেকে সম্ভাব্য হুমকি মোকাবিলার প্রস্তুতি নেওয়া। একইসঙ্গে নেপাল, বাংলাদেশ ও চীন সীমান্তসংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হচ্ছে।
গোয়েন্দা সংস্থার এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তনের পর উগ্রপন্থি তৎপরতা বৃদ্ধি এবং ভারতবিরোধী বক্তব্যের প্রসার ভারতের জন্য গুরুতর উদ্বেগের বিষয়। তিনি আরও উল্লেখ করেন, বছরের পর বছর বাংলাদেশ থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশ বেড়ে পশ্চিমবঙ্গ ও আসামের সীমান্তবর্তী জেলার জনসংখ্যার বিন্যাস বদলে গেছে, যা ভারতের নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়িয়েছে।
সম্মেলনে পূর্ব লাদাখ ও পূর্ব সীমান্তে চীন সীমান্তের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়েও বিস্তারিত পর্যালোচনা করা হয়। আলোচনায় ভবিষ্যৎ সক্ষমতা গড়ে তোলা, যৌথ প্রতিক্রিয়ার জন্য সংগঠন কাঠামো তৈরি এবং শান্তি ও যুদ্ধ উভয় সময়ে দক্ষতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।