নিজস্ব প্রতিনিধি:
চলতি বছরের ৪ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনায় বসেছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সে সময় প্রধান উপদেষ্টা স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে, তিনি আর চাপ সামলাতে পারছেন না এবং ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন আয়োজন করে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিতে চান।
সম্প্রতি ঢাকার গুলশানে ভারতের কলকাতার বাংলা দৈনিক ‘এই সময়’-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানান ফখরুল। সোমবার প্রকাশিত ওই সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেন, শুরুতে বিএনপি প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ঘেঁষা হিসেবে মনে করলেও পরিস্থিতি এখন বদলে গেছে। বর্তমানে ইউনূস আন্তরিকভাবেই চান, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক।
ফখরুল বলেন, আগস্টের ৫ তারিখে ইউনূস নির্বাচনের দিন ঘোষণা করেন। তার আগের রাতে ইউনূসের বাসভবনে বসে প্রধান উপদেষ্টা ও সেনাপ্রধানের সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে আমার দীর্ঘ আলোচনা হয়। সে সময় সেনাপ্রধান স্পষ্ট করেন, পুলিশ সদস্যের স্বল্পতার কারণে দীর্ঘদিন সেনাদের রাস্তায় দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে, যা কাম্য নয়। তিনি ডিসেম্বরে ভোটের প্রস্তাব দিলেও ফেব্রুয়ারিতে আপত্তি নেই বলে জানান এবং সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। সেনাপ্রধান চান, নির্বাচনের মাধ্যমে সেনারা ব্যারাকে ফিরুক।
প্রধান উপদেষ্টাও সেদিন জানান, নির্বাচিত সরকারের হাতে ফেব্রুয়ারিতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে তিনি দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিতে চান। তিনি বলেন, আর চাপ নিতে পারছেন না। এ সময় বিএনপিও আশ্বাস দেয়, সরকার গঠনের পর সংস্কার কার্যক্রম চলবে এবং স্বৈরাচারীদের বিচারের প্রক্রিয়াও অব্যাহত থাকবে।
ফখরুল আরও জানান, গত ৩০ আগস্ট জাতীয় পার্টির অফিস ভাঙচুরের ঘটনার পর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা একই বার্তা দিয়েছেন। তিনি তখন স্পষ্টভাবে বলেন, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন না হলে মার্চ থেকে তিনি আর দায়িত্বে থাকবেন না। এমন পরিস্থিতি তৈরি হওয়া উচিত নয়, যাতে নির্বাচনই আয়োজন করা সম্ভব না হয়।