নিজস্ব প্রতিনিধি:
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে নিউইয়র্কে বৈঠক করেছেন প্যারিসের মেয়র অ্যানে হিদালগো। মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, ক্রীড়া, সামাজিক উদ্যোগ এবং বৈশ্বিক মানবিক সংকট নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা হয়।
বৈঠকে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন, অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে চলমান সংস্কার কার্যক্রম, ক্রীড়া ও অলিম্পিককে ঘিরে সামাজিক ব্যবসার সম্ভাবনা এবং বৈশ্বিক শরণার্থী সমস্যা—বিশেষ করে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে মতবিনিময় করেন তারা।
ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক রূপান্তরের পথে অগ্রসর হচ্ছে। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এটি শুধু একটি নির্বাচন নয়, বরং দেশের গণতন্ত্রে নতুন যুগের সূচনা করবে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, এই নির্বাচন বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে একটি ভিত্তিমূলক ঘটনা হয়ে উঠবে, যা গণতন্ত্রকে দৃঢ়ভাবে এগিয়ে নেবে।
প্যারিস ২০২৪ অলিম্পিককে সামাজিক ব্যবসায়িক উদ্যোগে রূপান্তরে নেতৃত্ব দিয়েছেন ড. ইউনূস। তিনি ভবিষ্যতের সব অলিম্পিক—বিশেষ করে আসন্ন লস অ্যাঞ্জেলস অলিম্পিক—কার্বন নিরপেক্ষ করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
মেয়র হিদালগো এই সংকটময় সময়ে ড. ইউনূসের নেতৃত্বে পূর্ণ আস্থা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আপনার নেতৃত্বকে আমি গভীরভাবে সম্মান করি। আপনি অসাধারণ কাজ করেছেন, আর মানবতার জন্য আপনার অঙ্গীকার এক অনন্য দৃষ্টান্ত।
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তায় তহবিল বৃদ্ধির ওপরও জোর দেন দুই নেতা। বিশেষ করে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের শরণার্থী শিবিরে বসবাসরত ১০ লাখের বেশি মানুষের জীবনমান উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন তারা। মেয়র হিদালগো আশা প্রকাশ করেন, একদিন রোহিঙ্গারা নিরাপদ ও মর্যাদার সঙ্গে মিয়ানমারে ফিরে যেতে সক্ষম হবেন।
ড. ইউনূস জানান, জাতিসংঘ আগামী সপ্তাহে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজন করছে, যার মূল লক্ষ্য হলো বৈশ্বিক মনোযোগ ফিরিয়ে আনা এবং একটি স্থায়ী সমাধানের পথ খোঁজা।
তিনি মেয়র হিদালগোকে বাংলাদেশ সফরের জন্য আমন্ত্রণ জানান, যা দুই দেশের মধ্যে মানবিক ও সামাজিক ব্যবসায়িক সহযোগিতাকে আরও শক্তিশালী করবে।
বৈঠকে এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদও উপস্থিত ছিলেন।