নিজস্ব প্রতিনিধি:
বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে আলোচিত একটি দলের নাম জামায়াতে ইসলামী। সাম্প্রতিক সময়ে রাজনীতিতে দলটির প্রাসঙ্গিকতা আবারও বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে ডাকসু ও জাকসু নির্বাচনে জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের বিজয়ের পর থেকে দলটিকে ঘিরে বিভিন্ন মহলে নতুন কৌতূহল দেখা দিয়েছে। এমনকি কূটনৈতিক অঙ্গনেও শুরু হয়েছে নানা জল্পনা-কল্পনা।
ভারতের শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যম ‘এই সময়’-এ সাংবাদিক অনমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের বিশেষ প্রতিবেদন ‘পূর্বের হাওয়া: পর্ব ৩— ইসলামী জোট গড়ে জয়ী হতে কি পারবে জামায়াত’-এ এই বিষয়গুলো নিয়ে বিশদ বিশ্লেষণ প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশে কর্মরত মার্কিন কনসুলেটের একজন কূটনীতিক জামায়াতে ইসলামীকে যুক্তরাষ্ট্রের পছন্দের কারণ ব্যাখ্যা করেছেন। যদিও সংবাদমাধ্যমটি ওই কূটনীতিকের নাম প্রকাশ করেনি।
এক. তাদের নেতারা উচ্চশিক্ষিত; বাণিজ্যিকভাবে অত্যন্ত সফল।
দুই. তাদের আচরণ (ম্যানারস) খুব ভদ্র-সভ্য; কথা বলা যায় তাদের সঙ্গে।
তিন. তারা ফেলে আসা ইতিহাসের কোনো একটি সময়ে ভিন্ন পদক্ষেপ (মুক্তিযুদ্ধ বিরোধিতা)-এর কারণে বাংলাদেশের শাসক দলের হাতে নির্যাতিত ও মানবাধিকার বঞ্চিত।
চার. জামায়াত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বিশ্বাস করে।
পাঁচ. ইসলামি শক্তি হলেও জামায়াত তালেবানের মতো পিছিয়ে পড়া নয়, বরং প্রগতিশীলই বলা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই মার্কিন কূটনীতিককে প্রশ্ন করা হয়েছিল কেন জামায়াত যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এতটা গ্রহণযোগ্য। জবাবে তিনি একাধিক কারণ তুলে ধরেন এবং বিশেষভাবে পাঁচটি কারণ উল্লেখ করেন যার ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্র জামায়াতকে ক্ষমতায় দেখতে আগ্রহী। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দীর্ঘ কয়েক দশক ধরেই যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে জামায়াতকে ক্ষমতায় দেখতে চায় এবং এ নিয়ে তাদের কোনো গোপনীয়তা নেই।
সাক্ষাৎকারে ওই কূটনীতিক বলেন, “যে দেশের ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ মানুষ মুসলমান, সেখানে জামায়াত যদি সরকারে আসে ক্ষতি কী? তারা একটি শৃঙ্খলাবদ্ধ দল। তাদেরও একবার সুযোগ দেওয়া উচিত। আর যদি ব্যর্থ হয়, জনগণ স্বাভাবিক নিয়মেই তাদের সরিয়ে দেবে।”
এই বক্তব্যকে ঘিরে দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক মহলে নতুন করে আলোচনার ঝড় বইতে শুরু করেছে।