মো. সাইফুল ইসলাম, নীলফামারী প্রতিনিধি:
নীলফামারীতে কালী মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় এরফান আলী (১৮) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সদর উপজেলার সংগলশী ইউনিয়নের সুবর্ণখুলী গ্রামের ডারার পার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সন্ধ্যায় মন্দিরে পূজা করতে আসা নারীরা দেখতে পান, এক যুবক মন্দিরে ঢুকে প্রতিমাগুলো ভাঙচুর করছে। এ সময় তাদের চিৎকারে আশেপাশের লোকজন ছুটে এসে হাতেনাতে ওই যুবককে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন। এতে মন্দিরের চারটি প্রতিমা ভাঙচুর হয়।
কালী মন্দিরের সভাপতি পঙ্কজ কুমার বলেন, “আমাদের মন্দিরে ঢুকে প্রতিমা ভাঙচুরের মতো ঘটনা গ্রামে কখনও ঘটেনি। মহিলাদের চিৎকার শুনে আমরা দ্রুত ছুটে গিয়ে ওই যুবককে আটক করি। এ ঘটনায় মন্দিরের ভক্তরা ভীষণ আতঙ্কিত।”
গ্রেফতারকৃত যুবক সৈয়দপুর উপজেলার পোড়ার হাট আবাসন এলাকার মঈন খানের ছেলে এরফান আলী। তার বাবা জানান, দীর্ঘদিন ধরে এরফান মানসিক সমস্যায় ভুগছে এবং স্থানীয় কবিরাজের মাধ্যমে তার চিকিৎসা চলছে।
এদিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত সংগলশী ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি জিয়াউর রহমান বলেন, “আমি দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখি চারটি প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে। তবে যুবকের কথাবার্তা অসংলগ্ন ছিল এবং সে মন্দিরে ঢুকেই কোরআনের আয়াত তেলাওয়াত করতে থাকে। এমনকি পাশের দুর্গা মণ্ডপেও প্রতিমা ভাঙচুরের হুমকি দিচ্ছিল।”
এ ঘটনায় মন্দির কমিটির সেক্রেটারি বিজয় চন্দ্র রায় শুক্রবার রাতেই নীলফামারী থানায় ৪৪৮/২৯৫/৪২৭ ধারায় মামলা দায়ের করেন। মামলার নম্বর ২৮, তারিখ ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আহসান হাবীব জানান, “খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে যুবককে আটক করা হয়। ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ভাঙচুরের কারণ, যুবকের মানসিক অবস্থা এবং অন্য কোনও প্রভাবক জড়িত আছে কি না—তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
এদিকে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় এলাকাজুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে। ধর্মীয় সম্প্রীতির এলাকা হিসেবে পরিচিত নীলফামারীতে এমন ঘটনায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ভক্ত ও পূজারীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা দ্রুত ন্যায়বিচার ও মন্দিরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।