আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ ছড়ানোর অভিযোগ তুলে দেশটিকে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, পাকিস্তান যদি মানচিত্রে নিজের অবস্থান ধরে রাখতে চায়, তবে রাষ্ট্রীয় মদদের সন্ত্রাস অবশ্যই বন্ধ করতে হবে।
শুক্রবার রাজস্থানের অনুপগড় সেনাঘাঁটিতে জওয়ানদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ভারতীয় বাহিনী আর ধৈর্য দেখাবে না। পাকিস্তান যদি সন্ত্রাস বন্ধে ব্যর্থ হয়, তবে ‘অপারেশন সিঁদুরের’ দ্বিতীয় সংস্করণ খুব দূরে নয়। তার ভাষায়, “অপারেশন সিঁদুর ১.০-তে আমরা সংযম দেখিয়েছি, এবার তা আর করা হবে না। এমন কিছু করব যাতে পাকিস্তান ভাবতে বাধ্য হয়, তারা মানচিত্রে থাকতে চায় কি না।”
এ সময় জওয়ানদের প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেন সেনাপ্রধান। তিনি বলেন, ভগবান চাইলে শিগগিরই সুযোগ আসবে।
এর আগে ভারতের বিমানবাহিনীপ্রধান অমর প্রীত সিং দাবি করেন, পাঁচ মাস আগে চরম উত্তেজনার সময় এফ-১৬ ও জেএফ-১৭ মডেলের পাঁচটি পাকিস্তানি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে ভারতীয় বাহিনী। তার বক্তব্যের পরপরই সেনাপ্রধানের হুঁশিয়ারি আসে।
গত ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হন। ২০০৮ সালের মুম্বাই হামলার পর এটি ছিল ভারতে সবচেয়ে বড় বেসামরিক হামলা। ভারতের দাবি, হামলায় জড়িত চারজনের মধ্যে দুজন পাকিস্তানি নাগরিক।
এর পরপরই উত্তেজনা তীব্র হয়ে ওঠে। ৭ মে ভারতীয় জঙ্গিবিমান পাকিস্তানের ভেতরে অভিযান চালায় এবং লক্ষ্যবস্তুগুলোকে ‘সন্ত্রাসী অবকাঠামো’ বলে উল্লেখ করে। জবাবে পাকিস্তান ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন, কামান ও যুদ্ধবিমান দিয়ে পাল্টা হামলা চালায়। ১০ মে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার আগ পর্যন্ত উভয় পক্ষের প্রাণহানি ঘটে।
ভারত জুলাইয়ে ঘোষণা দেয়, পেহেলগাম হামলায় জড়িত তিন সন্ত্রাসীকে হত্যা করা হয়েছে এবং তারা পাকিস্তানি বলে প্রমাণও রয়েছে। তবে পাকিস্তান এ অভিযোগকে ‘বানোয়াট’ আখ্যা দিয়ে প্রত্যাখ্যান করে।
কাশ্মীর ইস্যুতে দুই প্রতিবেশী দেশ ইতিপূর্বে তিনটি যুদ্ধ করেছে। এসব দ্বন্দ্বের প্রভাব পড়েছে দুই দেশের বাণিজ্য, ভ্রমণ ও খেলাধুলার ক্ষেত্রেও। সাম্প্রতিক সংঘাতের জেরে ভারত পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে, যাকে ‘যুদ্ধের শামিল’ বলছে পাকিস্তান।