আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে তীব্র সমালোচনা করেছে ভারত। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বৃহস্পতিবার সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে অক্ষম এবং নিজেদের ব্যর্থতা নিয়মিতভাবে অন্যের ওপর চাপিয়ে দেয়। তার মতে, সরকারের উচিত আত্মসমালোচনা করা এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর স্থানীয় উগ্রবাদীদের সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ ও ভূমি দখলের ঘটনাগুলো গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা।
এ সময় তিনি বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সাম্প্রতিক মন্তব্যকেও প্রত্যাখ্যান করেন। খাগড়াছড়ির উত্তেজনার পেছনে ভারতের ভূমিকা রয়েছে—এমন অভিযোগকে তিনি ভিত্তিহীন ও মিথ্যা বলে দাবি করেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৩ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি সদর উপজেলায় মারমা সম্প্রদায়ের এক কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনার পর এলাকায় উত্তেজনা ও বিক্ষোভ শুরু হয়। ২৪ সেপ্টেম্বর পুলিশ শয়ন শীল নামে ১৯ বছরের এক তরুণকে গ্রেফতার করে। এরপর ‘জুম্ম ছাত্র-জনতা’ সংগঠন অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে। ২৭ সেপ্টেম্বর ভোরে অবরোধ চলাকালে সহিংসতায় অন্তত তিনজন নিহত হন এবং লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রশাসন গুইমারায় ১৪৪ ধারা জারি করে।
তবে ভুক্তভোগী কিশোরীর স্বাস্থ্য পরীক্ষায় ধর্ষণের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন মেডিকেল টিমের প্রধান চিকিৎসক। এ অবস্থায় ঢাকায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী দাবি করেন, পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে অস্ত্র ও অর্থ যোগান দেওয়া হচ্ছে এবং ভারতের ইন্ধনেই খাগড়াছড়িতে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, দুর্গাপূজা উৎসব চলাকালে একটি মহল ইচ্ছাকৃতভাবে পরিস্থিতি অশান্ত করার চেষ্টা করছে। উপদেষ্টা জানান, পার্বত্য এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে অবস্থান করছেন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে সমন্বয় করছেন। সরকারের দাবি, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
তবে ভারতের প্রতিক্রিয়া ইঙ্গিত করছে, খাগড়াছড়ির সাম্প্রতিক অস্থিরতা শুধু অভ্যন্তরীণ বিষয়েই সীমাবদ্ধ নয়, বরং কূটনৈতিক সম্পর্কেও নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।