নিজস্ব প্রতিনিধি:
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নির্বাচনে ভূমিকা তার শারীরিক অবস্থার ওপর নির্ভর করছে বলে জানিয়েছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সম্প্রতি বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন গণমাধ্যমটির সম্পাদক মীর সাব্বির ও সিনিয়র সাংবাদিক কাদির কল্লোল।
বিএনপির চেয়ারপারসনকে ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনে কোনো ভূমিকায় দেখা যাবে কিনা—এমন প্রশ্নের জবাবে তারেক রহমান বলেন, “আপনি এমন একজন মানুষের কথা বলছেন, যিনি বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য বারবার অবদান রেখেছেন। যখনই গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে, তিনিই সামনে থেকে লড়েছেন। এবারও আমরা সবাই দেখেছি কীভাবে স্বৈরাচারী সরকারের সময় তার ওপর নির্যাতনের খড়গ নেমে আসে। কিন্তু তিনি আপস করেননি। এমন একজন মানুষ আজ অসুস্থ। কেন এবং কীভাবে তিনি অসুস্থ হলেন, তা দেশবাসী জানেন। মিথ্যা মামলায় তাঁকে কারাগারে নেওয়া হয়েছিল, যেখানে একজন সুস্থ মানুষ অসুস্থ হয়ে ফিরে এসেছেন। তাঁকে চিকিৎসার সুযোগ থেকেও বঞ্চিত করা হয়েছে।”
তারেক রহমান বলেন, “আমি একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে বিশ্বাস করি, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে যেই প্রত্যাশিত ও জনগণের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, সেখানে যদি তার শারীরিক সক্ষমতা অনুমতি দেয়, তাহলে নিশ্চয়ই তিনি কিছু না কিছু ভূমিকা রাখবেন।”
খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশ নেবেন কিনা—এমন প্রশ্নের জবাবে তারেক রহমান বলেন, “এটি এখনই বলা সম্ভব নয়। বিষয়টি পুরোপুরি নির্ভর করছে তাঁর শারীরিক সক্ষমতার ওপর।”
বিএনপির ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তারেক রহমান বলেন, “রাজনীতি পরিবারকেন্দ্রিক কিছু নয়, এটি জনগণের সমর্থনের ওপর নির্ভর করে। একজন চিকিৎসকের সন্তান চিকিৎসক হলে ভালোও করতে পারে, খারাপও করতে পারে। একজন আইনজীবীর সন্তানও কখনো ভালো করে, কখনো না। রাজনীতিতেও একই বিষয় প্রযোজ্য। সবাই সফল হয় না, কেউ কেউ হয়।”
তিনি আরও বলেন, “গত ১৭ বছরে আমি দেখেছি বাংলাদেশের রাজনীতিতে যারা কাজ করেন, তারা নানাভাবে হয়রানির শিকার হয়েছেন। আমাদের বহু নেতাকর্মী মিথ্যা মামলায় কারাগারে গেছেন, নির্যাতিত হয়েছেন, ঘরবাড়ি ভাঙা হয়েছে। আমি নিজেও এসবের মধ্য দিয়ে গিয়েছি—শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছি, জেল খেটেছি, মিথ্যা অপপ্রচারের শিকার হয়েছি। কিন্তু সবকিছুর পরও আমি টিকে আছি। রাজনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে নয়, এটি জনগণের সমর্থন ও আস্থার ভিত্তিতে এগিয়ে চলে। যিনি সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ করে সামনে এগিয়ে নিতে পারবেন, তিনিই এগিয়ে যাবেন। সময়ই প্রমাণ করবে কে সেই নেতৃত্ব দিতে পারবেন।”