নিজস্ব প্রতিনিধি:
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (জকসু) নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সাইবার নিরাপত্তা আইনের মামলায় ১৫ মাস কারাভোগ করা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আলোচিত শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরা।
শুক্রবার রাতে তিনি বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এখনো ঠিক করেননি কোন প্যানেল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন— কোনো দলের হয়ে নাকি স্বতন্ত্রভাবে। তবে বিভিন্ন দল ও প্যানেল থেকে তাকে প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
খাদিজা বলেন, “বিভিন্ন প্যানেল আমাকে তাদের দলে নিতে চায়। আমি এখনো কাউকে নিশ্চয়তা দিইনি। প্রথমে তাদের সঙ্গে কথা বলছি, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বুঝে নিচ্ছি। যাদের সঙ্গে আমার ম্যান্ডেট মিলে যাবে, তাদের সঙ্গেই যাব।”
ছাত্রদলের প্যানেল থেকে প্রার্থী হওয়ার গুঞ্জন সম্পর্কে তিনি বলেন, “আমি এখনো সিদ্ধান্ত নেইনি। ছাত্রদলের সঙ্গেও কথা হয়েছে। বিবেচনা করে দ্রুতই সিদ্ধান্ত জানাব।”
নির্বাচিত হলে শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট, চিকিৎসা সেবা ও একাডেমিক মানোন্নয়নে কাজ করতে চান বলে জানান তিনি। খাদিজা বলেন, “দ্বিতীয় ক্যাম্পাস বাস্তবায়ন, বৃত্তি সুবিধা নিশ্চিতকরণ, হল ক্যান্টিন ও ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের মান উন্নয়নের চেষ্টা করব। ইতোমধ্যে কিছু প্রাইভেট মেডিকেল কলেজের সঙ্গে কথা বলেছি, যাতে শিক্ষার্থীরা কম খরচে মেডিকেল টেস্ট করাতে পারে। এছাড়া পুরান ঢাকার অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও আর্থিক অনটনে অনেক শিক্ষার্থী মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে, তাদের জন্য কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করব।”
দীর্ঘ ১৫ মাসের কারাভোগের অভিজ্ঞতা স্মরণ করে তিনি বলেন, “আমি হাসিনাকে ফ্যাসিস্ট বলার কারণে জেল খেটেছি। আমি একজন মজলুম, তাই মজলুমের পক্ষে কাজ করব। কেউ যদি মতপ্রকাশে বাধাগ্রস্ত হয়, আমি তার পাশে থাকব। শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কথা বললে নাম্বার কেটে দেওয়া— এই ভয়ের সংস্কৃতি আমি ভাঙতে চাই।”
খাদিজাতুল কুবরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯–২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং বর্তমানে নওয়াব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী ছাত্রী হলে থাকছেন।
ছাত্রদলের প্যানেল থেকে তার প্রার্থী হওয়ার গুঞ্জন বিষয়ে শাখা ছাত্রদল আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, “আমরা একটি ইনক্লুসিভ প্যানেল দেওয়ার চেষ্টা করছি। তবে কে প্যানেলে থাকবে, তা এখনই জানানো সম্ভব নয়।”
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের অক্টোবরে অনলাইনে ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার’ বিরোধী বক্তব্য প্রচারের অভিযোগে খাদিজাতুল কুবরা ও মেজর (অব.) দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে কলাবাগান ও নিউমার্কেট থানায় পৃথক মামলা দায়ের করা হয়। মেজর (অব.) দেলোয়ার হোসেনের ইউটিউব চ্যানেলে লাইভ টকশো পরিচালনা করার কারণে এই মামলার আসামি হন তিনি। এ মামলায় তিনি প্রায় ১৫ মাস কারাভোগ করেন।