২রা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১১ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

ভারতে পলাতক আওয়ামী নেতাদের নির্বাচনে নাশকতার আশঙ্কা: গোয়েন্দা প্রতিবেদনে চাঞ্চল্যকর তথ্য

নিজস্ব প্রতিনিধি:

গেল বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর থেকে ভারতে আশ্রয় নেওয়া দলটির প্রধান শেখ হাসিনাসহ পলাতক নেতারা বিভিন্ন ভয়ভীতি ও উসকানিমূলক নির্দেশনা দিয়ে আসছেন। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করা এবং জাতীয় নির্বাচন বানচালের লক্ষ্যে তারা নতুন করে চক্রান্তে লিপ্ত—এমন তথ্য উঠে এসেছে একটি বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে, যা ইতোমধ্যে সরকারের উচ্চপর্যায়ে জমা পড়েছে।

গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়, আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে ভারতের বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে পলাতক আওয়ামী নেতারা দেশে প্রবেশের চেষ্টা করতে পারে। ৩২টি সীমান্তবর্তী আসনে প্রবেশ করে ভয়ভীতি প্রদর্শন, সংখ্যালঘু ভোটারদের কেন্দ্রে যাওয়া ঠেকানো এবং সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ব্যবহার করে সহিংসতা সৃষ্টির পরিকল্পনা থাকতে পারে। ভারত থেকে অবৈধ অস্ত্র এনে নির্বাচনে সংঘাত সৃষ্টিরও শঙ্কা রয়েছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, গত ৫ আগস্টের সহিংসতা ও পুলিশ স্টেশন আক্রমণের পর লুট হওয়া ৫,৭৬৩টি অস্ত্রের মধ্যে এখনো উদ্ধার হয়নি ১,৩৪০টি। এছাড়া আওয়ামী আমলে দেওয়া ১০,৫০৬টি অস্ত্রের লাইসেন্সের মধ্যে ৬৫৭টি অস্ত্র জমা হয়নি—যেগুলোর বড় অংশ এখন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হাতে যেতে পারে বলে ধারণা গোয়েন্দাদের।

গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, দেশে ৬২টি সীমান্তবর্তী আসনের মধ্যে ৩২টিতে সংখ্যালঘু ভোট ১০ শতাংশের বেশি। ২৬টি আসনে হিন্দু ভোট ২০ শতাংশের ওপরে। এসব এলাকায় সাম্প্রদায়িক উসকানির মাধ্যমে ভোটের পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা হতে পারে। গত এক বছরে সংখ্যালঘুদের ওপর ২,৬৮৫টি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে, যার ৭৬ শতাংশই রাজনৈতিক কারণে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ভারতে পলাতক আওয়ামী নেতাদের দেশে প্রবেশের আশঙ্কা রয়েছে। সরকারকে সতর্ক থাকতে হবে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দৃঢ়ভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
সাবেক আইজিপি আব্দুল কাইয়ুম মনে করেন, সঠিক প্রস্তুতি ও কঠোর নজরদারি থাকলে এই চক্রান্ত সফল হতে পারবে না।

বিশ্লেষক অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর অভ্যন্তরীণ কোন্দল সুষ্ঠু নির্বাচনের বড় বাধা। এআই–চালিত ভুয়া তথ্য ও ডিপফেক কনটেন্ট ভোটে বড় ঝুঁকি তৈরি করবে—কিন্তু এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি নেই।

পুলিশ সদর দপ্তর বলছে, সব ধরনের ঝুঁকি বিবেচনায় রেখেই নিরাপত্তা পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তফসিল ঘোষণার পর অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান আরও জোরদার করা হবে।

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top