নিজস্ব প্রতিনিধি:
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং গণভোটের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৬, সকাল ৭টা ৩০ মিনিট থেকে বিকেল ৪টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্নভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন এ তফসিল ঘোষণা করেন। তার রেকর্ডকৃত ভাষণ বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারে সম্প্রচার করা হয়।
দেশের ইতিহাসে এবারই প্রথম একই দিনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। জাতীয় নির্বাচনের ব্যালট হবে সাদা-কালো এবং গণভোটের ব্যালট গোলাপি রঙের। তফসিল ঘোষণার আগে বুধবার সিইসি কমিশন সদস্যদের নিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন এবং নির্বাচন প্রস্তুতি সম্পর্কে তাকে অবহিত করেন। রাষ্ট্রপতি এতে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
সৌজন্য সাক্ষাতে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদসহ রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। তফসিল ঘোষণার মধ্য দিয়ে নির্বাচন ও গণভোটকে ঘিরে চলমান নানা জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটে এবং দেশ আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনি প্রক্রিয়ায় প্রবেশ করে।
এবারের নির্বাচনে প্রবাসীরাও পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। সিইসির ভাষণ দেওয়ার সময় পর্যন্ত তিন লাখের বেশি প্রবাসী অনলাইনে ভোটার হিসেবে নিবন্ধন করেছেন।
সংসদীয় আসনের সীমানা পরিবর্তন
তফসিল ঘোষণার আগে আপিল বিভাগের রায়ের ভিত্তিতে কিছু সংসদীয় আসনের সীমানা পরিবর্তন করতে যাচ্ছে ইসি। বাগেরহাট-১, বাগেরহাট-২, বাগেরহাট-৩ এবং গাজীপুর-৬ আসনসংক্রান্ত অংশকে অবৈধ ঘোষণা করে সংশোধনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর আগে হাইকোর্টও বাগেরহাটের চারটি আগের আসন পুনর্বহাল করে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছিল।
তফসিল থেকে ভোটের ব্যবধানের ইতিহাস
বাংলাদেশের সংসদ নির্বাচনের ইতিহাসে তফসিল থেকে ভোটের দিনের ব্যবধান বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ছিল—প্রথম নির্বাচনে ৬০ দিন, দ্বিতীয়তে ৫৪ দিন, তৃতীয়তে ৪৭ দিন, চতুর্থে ৬৮ দিন, পঞ্চমে ৫২ দিন, ষষ্ঠে ৩৯ দিন, সপ্তমে ৪৭ দিন, অষ্টমে ৪২ দিন, নবমে ৩৭ দিন, দশমে ৪২ দিন, একাদশে ৪৯ দিন। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে তফসিল ঘোষণার পর ভোট হয় ৫৩ দিন পর।
দ্বাদশ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমার সময় ছিল ১৪ দিন, বাছাই ৪ দিন, আপিল-নিষ্পত্তি ও প্রত্যাহারের জন্য মোট ১৩ দিন এবং প্রতীক বরাদ্দের পর প্রচারণার সুযোগ ছিল ১৯ দিন। প্রচার শেষ হওয়ার ৪৮ ঘণ্টা পর ভোটগ্রহণ চলে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।