২৪শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১লা রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

রাউজানে শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার: অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার

আজগর সালেহী, চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ

চট্টগ্রামের রাউজান থানা পুলিশের অভিযানে অস্ত্রধারী শীর্ষ সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও অপহরণকারী আরাফাত মামুন এবং বিপ্লব বড়ুয়া গ্রেপ্তার হয়েছে। এ সময় তাদের হেফাজত থেকে ১টি বিদেশি রিভলবার, ৫ রাউন্ড গুলি, ১টি রাম দা, ১টি দেশীয় ওয়ান শুটার গান (এলজি) ও ২ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করা হয়।

শুটকি ব্যবসায়ী হত্যাকাণ্ড ও তদন্তের অগ্রগতি

গত ২৪ জানুয়ারি রাউজানের নোয়াপাড়া এলাকায় শুটকি ব্যবসায়ী মো. জাহাঙ্গীর আলম জুমার নামাজ পড়তে যাওয়ার পথে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন। এ ঘটনায় তার মামাতো ভাই মো. আব্বাস উদ্দিন আহত হন। দুর্বৃত্তদের ছোড়া শটগানের গুলিতে জাহাঙ্গীর আলম গুরুতর আহত হন এবং হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

রাউজান থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং সিসিটিভি ফুটেজসহ প্রয়োজনীয় আলামত সংগ্রহ করে। ভিকটিমের ছেলে মাকসুদ আলমের এজাহারের ভিত্তিতে অজ্ঞাত ২৫-৩০ জনকে আসামি করে মামলা রেকর্ড করা হয়। এরপর থেকে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন ও অপরাধীদের গ্রেপ্তারে নিয়মিত অভিযান চালিয়ে আসছে। ইতিমধ্যে রমজান আলী ও গিয়াস উদ্দীন নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

সাঁড়াশি অভিযানে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার

সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের শনাক্ত করে পুলিশ। তাদের গ্রেপ্তারে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে। এরই ধারাবাহিকতায়, ৫ মার্চ ২০২৫ তারিখ রাত ২টার দিকে রাউজান থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়ার নেতৃত্বে অভিযান চালানো হয়।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে, রাউজানের শীর্ষ সন্ত্রাসী ও ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামি আরাফাত মামুন পূর্ব গুজরা ইউনিয়নের গরীব উল্যাহপাড়ায় তার মামা মোহাম্মদ আজমের বাড়িতে অবস্থান করছে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আরাফাত মামুন ও তার সহযোগী বিপ্লব বড়ুয়া অস্ত্র প্রদর্শন করে পালানোর চেষ্টা করে। তবে পিছু ধাওয়া করে পুলিশ তাদের আটক করতে সক্ষম হয়।

অস্ত্র উদ্ধার ও মামলার বিস্তারিত

আসামিদের হেফাজত থেকে উদ্ধার করা হয়: ১. আরাফাত মামুনের কাছ থেকে – ১টি বিদেশি রিভলবার (লোডেড অবস্থায় ৫ রাউন্ড গুলি) ও ১টি রাম দা। ২. বিপ্লব বড়ুয়ার কাছ থেকে – ১টি কাঠের বাটযুক্ত ওয়ান শুটার গান (এলজি) ও ২টি কার্তুজ।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা স্বীকার করেছে যে, তাদের কাছে থাকা অস্ত্রের কোনো বৈধ লাইসেন্স নেই এবং এগুলো ব্যবহার করে তারা অপহরণ, চাঁদাবাজি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করত।

তদন্তে উঠে এসেছে, আসামিরা নোয়াপাড়া এলাকার শুটকি ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে এসআই কাউছার হামিদ রাউজান থানায় মামলা দায়ের করেছেন (মামলা নং-১, তারিখ- ৫ মার্চ ২০২৫, ধারা- ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইন ১৯A/১৯(f))।

রাউজান থানা পুলিশ ও চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top