২৩শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৯শে সফর, ১৪৪৭ হিজরি

ঐতিহাসিক শোলাকিয়ায় লাখো লাখো মুসল্লিদের ঢল

শাহজাহান সাজু , কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি: 

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে  ১৯৮তম পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (৩১ মার্চ) সকাল ১০টায় ঐতিহাসিক এ ঈদগাহে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন মুফতি মাওলানা আবুল খায়ের মোহাম্মদ ছাইফুল্লাহ।

রেওয়াজ অনুযায়ী, জামাত শুরুর আগে মুসল্লিদের সংকেত দিতে শর্টগানের ছয়টি ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়। ৩টি জামাত শুরুর ৫মিনিট আগে, ২টি ৩মিনিট আগে এবং শেষটি জামাত শুরুর ১ মিনিট আগে ছোড়া হয়।

বড় ঈদগাহ, বড় জামাত, বেশি মুসল্লির সঙ্গে জামাত আদায় করলে দোয়া কবুল হয়। এমন আকর্ষণে আগের দিন ও সকাল থেকেই এ ঈদ জামাতে নামাজ আদায়ের জন্য কিশোরগঞ্জ ও দেশ-বিদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ছুটে এসেছেন লাখো লাখো মুসল্লি।

এছাড়াও দূর-দূরান্তের মুসল্লিদের ঈদগাহ মাঠে আসার সুবিধার্থে ময়মনসিংহ ও ভৈরব থেকে দুইটি স্পেশাল ট্রেন যাতায়াত করে। ঈদের নামাজ শেষে খুতবা পাঠ ও মোনাজাতে মুফতি মাওলানা আবুল খায়ের মোহাম্মদ ছাইফুল্লাহ দেশ ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি-কল্যাণ ও উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন-কিশোরগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী, শোলাকিয়া ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সম্পাদক ও কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. এরশাদ মিয়া প্রমুখসহ সরকারি কর্মকর্তা, রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও সুধীজন।

ঈদগাহ ময়দানকে ঘিরে গড়ে তোলা হয় বিভিন্ন স্তরের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কিশোরগঞ্জ শহর এবং আশপাশের এলাকায় বাড়ানো হয় গোয়েন্দা নজরদারি। র‌্যাব, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ানসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রায় ১ হাজার ৫ শত সদস্য দিয়ে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয় শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানকে। এছাড়া সিসি ক্যামেরা, ড্রোন ক্যামেরা ও ওয়াচ টাওয়ারের মাধ্যমে ঈদগাহের ভিতর এবং বাইরের এলাকা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হয়। এদিকে, ঈদগাহ ময়দানে উন্মুক্ত প্রবেশপথে স্থাপিত আর্চওয়ে দিয়ে মুসল্লিরা শৃঙ্খলাবদ্ধ হয়ে ঈদগাহে প্রবেশ করেন।

এর আগে তিন দফা মেটাল ডিটেক্টরে সবার দেহ তল্লাশি করা হয়। নিরাপত্তার স্বার্থে মুসল্লিদের কোনো ধরনের ব্যাগ নিয়ে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। জায়নামাজ ও সঙ্গে থাকা মোবাইলফোন নিয়ে ঢুকতে দেওয়া হয় তাদের। স্থানীয়দের মতে, ১৮২৮ সালে এই মাঠে ঈদের জামাতে সোয়া লাখ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করেছিলেন। সেই থেকে এ মাঠের নাম হয় ‘সোয়া লাখিয়া’, এরপর ধীরে ধীরে সেই ‘সোয়া লাখিয়া’থেকে শোলাকিয়া নামে পরিচিত হয়ে ওঠে।

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top