৯ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৬শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১১ই জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

মুসলমানদের অধঃপতন এবং ফিলিস্তিন থেকে শিক্ষা

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মানুষ সৃষ্টি করেছেন অতি আদর ও ভালোবাসা দিয়ে! আদর মহব্বত যত্নসহকারে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তার সৃষ্টির সেরা জীব আশরাফুল মাখলুকাত সৃষ্টি করেছেন, যা হলো মানবজাতি, এই মানব জাতিকে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন, হাত পা চোখ নাক কান সবকিছু অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দিয়েছেন, এমন কিছু নেই যে মানুষের প্রয়োজনে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন দেয়নি!

তার মধ্যে মানুষের ব্রেনটাকে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন, শতশত কম্পিউটারের যে মেমোরাই সেভ করা থাকে, তার থেকেও কয়েক গুণ মানুষের ব্রেনে তা সেভ করা আপলোড করা থাকে! রাব্বুল আলামিন মানুষের জ্ঞান বিবেক-বুদ্ধি আক্কেল জেহান শক্তি দিয়েছেন ভালো মন্দ বিচার করার জন্য, তার-ই ধারাবাহিকতায় কেউ আমরা জন্মসূত্রে মুসলমান! কেউবা আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের মহাগ্রন্থ আল কুরআন পেয়ে গবেষণা করে মুসলমান! অবশ্য নবী করীম (সা:) আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর হাদিসে এসেছে প্রত্যেক আদম সন্তানই জন্মগ্রহণ করে ইসলামী দ্বীনের উপরে ।

তারপরে তার পিতা মাতা কেউ তাকে পত্তলিকের অনুসারী হিসেবে গড়ে ওঠায় , কেউবা ইসলামিক শিক্ষার উপরে অটল অবিচল থাকে। যুগের পর যুগ চলে যাচ্ছে! আমাদের জীবন থেকে হাজার হাজার সময় ঘন্টা বিবাহিত হয়ে চলে যাচ্ছে! আমাদের পূর্বপুরুষ সহ চলে গিয়েছে, আমরাও চলে যাবো এ পৃথিবী থেকে একদিন। আশ্চর্যের ব্যাপার হলো আমরা যে ইসলামিক শিক্ষার উপরে আছি আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নেয়ামত হিসেবে আমরা ইসলামটাকে পেয়েছি! সেই ইসলাম ধর্মটাকে কি কখনো আমরা একবার গবেষণা করে মনোযোগ সহকারে ভালো করে বিশ্লেষণ করে দেখেছি!

কখনো দেখি না! বা দেখার সময়ও পাইনা অথচ আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এই কুরআনে সব কিছু দিয়ে দিয়েছেন, কুরআনে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মানুষের জীবন ব্যবস্থা, সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক! জ্ঞান বিজ্ঞান, বাণিজ্য অর্থনীতি, ইসলাম হলো একটা পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা, অথচ আমরা সেই কুরআন এবং ইসলামকে সঠিকভাবে আঁকড়ে ধরতে পারি না!

আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সূরা ফীল নাযিল করলেন সূরা ফীল এর আয়াতগুলো পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করলে প্রত্যেকটা কথা বিজ্ঞানময় হিসেবে ফুটে ওঠে !

অর্থ : তুমি কি দেখনি যে, তোমার প্রতিপালক হাতি-ওয়ালাদের সাথে কিরূপ (আচরণ) করেছিলেন? (০১) তিনি কি তাদের চক্রান্ত ব্যর্থ করে দেন নি? (০২) তাদের বিরুদ্ধে তিনি ঝাঁকে ঝাঁকে পাখী পাঠিয়েছিলেন। (০৩) যারা তাদের উপর পোড়া মাটির কঙ্কর নিক্ষেপ করেছিল। (০৪) অতঃপর তিনি তাদের চিবানো তৃণ-ঘাসের মতো করে দিয়েছিলেন। (০৫) তুমি কি দেখনি তোমার রব হাতীওয়ালাদের সাথে কী করেছিলেন?

তুমি কি দেখনি (কা‘বা ঘর ধ্বংসের জন্য আগত) হাতীওয়ালাদের সঙ্গে তোমার প্রতিপালক কীরূপ ব্যবহার করেছিলেন?

তুমি কি দেখনি যে, তোমার রাব্ব হস্তি অধিপতিদের কিরূপ (পরিণতি) করেছিলেন?

Have you not considered, [O Muhammad], how your Lord dealt with the companions of the elephant? অর্থাৎ সুরা ফিল সুরাটাকে গবেষণা করলে দেখা যায় এই সূরা থেকে গবেষণা করে বিজ্ঞানীরা জঙ্গি বিমান তৈরি করল! আবাবিল পাখি তার ঠোঁট থেকে কঙ্কর নিক্ষেপ করেছে হস্তি বাহিনীদেরকে, কঙ্কর নিক্ষেপ করা থেকে বুঝা যায় এখান থেকে আবিষ্কার করা হলো এটম বোমা! কুরআনের শিক্ষার কথা জ্ঞানের কথা বিজ্ঞানের কথা মতান্তরে ৯৫ বার বলা হয়েছে। আর নামাজের কথা বলা হয়েছে ৮১ থেকে ৮২ বার মতান্তরে , নামাজ থেকেও বেশি জ্ঞান বিজ্ঞানের কথা বলা হয়েছে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁর কোরআনের বেশি বলেছেন, একটি হাদিসে এসেছে তোমরা জ্ঞান শিক্ষা করার জন্য সুদূর চীন দেশ পর্যন্ত যেতে পারো।

এই যে গাজা বাসিকে কে প্রতিনিয়তই তাদের প্রাণ দিতে হচ্ছে! প্রতিনিয়তই মুসলমানদের প্রাণ নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে পশ্চিমা শক্তি! কারণ আজ মুসলমান জ্ঞান বিজ্ঞান প্রযুক্তি সবকিছুই তারা তুচ্ছ করে দিচ্ছে! অথচ এই প্রযুক্তি আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কুরআনে পরিপূর্ণভাবে দিয়ে দিয়েছেন, যাহার নির্যাস আমরা নিতে পারি না যাহার! যাহার চুম্বক অংশ আমরা বের করতে পারছি না, আমরা গাফেল আর গাফেল ই রয়ে গেলাম!

বাংলাদেশের ফিলিস্তিনের প্রতিবাদ মিছিল একজন আলেম দেখলাম ঐদিন প্রতিবাদ বক্তব্য বললেন তার বক্তব্যে তিনি বলছেন (আমরাও জানি মিছিল মিটিং বক্তব্যে কিছুই হবে না, বাবাজিরা তোমরা যারা মোবাইল চালাও কম্পিউটার চালাও তোমাদের আজকে থেকেই নেমে যেতে হবে মোবাইল কম্পিউটার কিভাবে তোমরা চালাও সে ভাবে তোমাদের ডোন বিমান আবিষ্কার করতে হবে।সে দিকে তোমাদের নজর দিতে হবে, অনেক দেরি হলেও কওমিপন্থী এবং আলেম সমাজ বুঝতে পারলেন।

শুধু দান সদকা মিছিল মিটিং দিয়ে বিশ্বের দরবারে পরিপূর্ণভাবে মুসলমান মাথা মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবেনা। সেইজন্য মুসলমানদের হাতে দরকার প্রযুক্তি আর প্রযুক্তি, জ্ঞান বিজ্ঞানে পারদর্শী এবং প্রযুক্তি নির্ভরশীল, পাশাপাশি আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কুরআনের পরিপূর্ণ হুকুম আহকাম অক্ষরে অক্ষরে পালন করা, কুরআন যে একটা বিজ্ঞান সেই ব্যাপারে পরিপূর্ণ ধারণা রাখা। নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল ও তন্মধ্যকার সবকিছু সর্বদা আল্লাহর গুণগান করে। কিন্তু মানুষ তা বুঝতে পারে না।

যেমন আল্লাহ বলেন ‘সপ্ত আকাশ ও পৃথিবী এবং ওদের মধ্যকার সবকিছু তাঁরই গুণগান করে। আর এমন কিছু নেই যা তাঁর প্রশংসা সহ পবিত্রতা বর্ণনা করে না। কিন্তু ওদের গুণগান তোমরা বুঝতে পারো না। নিশ্চয়ই তিনি সহনশীল ও ক্ষমাপরায়ণ’ (ইসরা ১৭/৪৪)। এগুলি সবই আল্লাহর আয়াত বা নিদর্শন সমূহের অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে সঠিক জ্ঞান এবং ইসলামের দীক্ষা সম্পর্কে জানার তৌফিক দান করুক।

মু. আমিনুল ইসলাম তারেক
সাবেক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী গণমাধ্যম কর্মী লেখক ও কলামিস্ট

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

এই বিভাগের আরও খবর

আল্লাহর ভালোবাসা—হৃদয়ের আকাশ জুড়ে অনন্ত শান্তির প্রভা

লেখক জাহেদুল ইসলাম আল রাইয়ান যখন পৃথিবীর সমস্ত শব্দ স্তব্ধ হয়ে আসে, যখন সব আশা ধূসর ধুলোয় মিশে যায়—তখনো এক অনন্ত আশ্রয়, এক চিরন্তন ভালোবাসা

৫ মে: শাপলা চত্বরের সেই রক্তাক্ত রাতের স্মৃতি

আজ ঐতিহাসিক ৫ মে। ক্যালেন্ডারে অনেক বছর পেরিয়ে গেলেও বদলায়নি সেই ‘ভয়াল রাতের স্মৃতি’। ২০১৩ সালের এই দিন, ঢাকার মতিঝিল শাপলা চত্বরে ইতিহাসের ‘নির্মমতম গণহত্যা’

আবেগের কফিনে গাঁথা এক জীবনের কবরগাথা

লেখক জাহেদুল ইসলাম আল রাইয়ান সে ছিল স্বপ্নবতী এক তরুণী—চেহারায় মাধুর্য, মননে দীপ্তি। চোখে ছিল স্বপ্ন, হৃদয়ে ছিল নির্মল আকাঙ্ক্ষা। আন্ডারগ্র্যাজুয়েট পড়ার সময় একদিন স্বাভাবিকভাবেই

ঘামে লেখা গৌরবনামা ইসলামে শ্রমিকের মর্যাদা ও মানবতার দৃষ্টিভঙ্গি

লেখক জাহেদুল ইসলাম আল রাইয়ান সকাল যখন দিগন্তে আলো ছড়িয়ে দেয়, তখন প্রথম যে শব্দ ভেসে আসে, তা হলো হাতুড়ির শব্দ, করাতের ঘর্ষণ কিংবা জমিনে

Scroll to Top