নিজস্ব প্রতিবেদক:
গভীর রাতে নিয়ন্ত্রণ রেখার (এলওসি) কাছাকাছি এসে পাকিস্তান বিমান বাহিনীর (পিএএফ) ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে যায় ভারতের ৪টি যুদ্ধবিমান। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) রাতে এ ঘটনা ঘটে বলে নিশ্চিত করেছে পাকিস্তান বিমান বাহিনী। পাকিস্তানের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ডন ও দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন এ খবর প্রকাশ করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তান বিমান বাহিনী জানায়, রাতের আঁধারে ভারতীয় বিমানবাহিনীর চারটি রাফাল যুদ্ধবিমান এলওসির কাছে টহল দিচ্ছিল। এসময় পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার আওতায় থাকা রাডার সেগুলো শনাক্ত করে এবং তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানায়। পাকিস্তানি যুদ্ধবিমান কাছাকাছি চলে আসতেই ভারতীয় যুদ্ধবিমানগুলো পিছু হটে নিজেদের আকাশসীমায় ফিরে যায়।
দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন জানায়, যুদ্ধবিমানগুলো ভারতের নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীর অঞ্চলে টহল দিচ্ছিল। তখনই পাকিস্তান এয়ারফোর্স বিষয়টি নজরে এনে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেয়।
উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে এক ভয়াবহ হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাদের অধিকাংশই ছিলেন পর্যটক। এ হামলার পর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে ফের উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
ওই ঘটনার পরদিন ভারত বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত সিন্ধু পানিচুক্তি একতরফাভাবে স্থগিত ঘোষণা করে। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান ২৪ এপ্রিল হুঁশিয়ারি দিয়ে জানায়, তারা সিমলা চুক্তি কার্যকরভাবে স্থগিত করতে পারে এবং ভারতের জন্য আকাশসীমা বন্ধ করে দিতে পারে।
ভারতের দাবি, হামলার সঙ্গে সীমান্তপারের (পাকিস্তানের) যোগসূত্র থাকতে পারে। যদিও কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ এখনও উপস্থাপন করতে পারেনি। অন্যদিকে পাকিস্তান এ অভিযোগ দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করেছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ ঘটনাটির স্বাধীন তদন্ত দাবি করে বলেন, “সত্য উদ্ঘাটনের স্বার্থে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।”
মঙ্গলবার রাতেই পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আত্তা তারার সাংবাদিকদের জানান, ইসলামাবাদে বিশ্বাসযোগ্য গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে যে, ভারত পহেলগাঁও হামলার অজুহাতে ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তানে সামরিক হামলা চালাতে পারে।
তিনি বলেন, “ভারত নিজেই বিচারক, জুরি ও শাস্তিদাতা হয়ে ওঠার প্রয়াস চালাচ্ছে—এটা অত্যন্ত দায়িত্বজ্ঞানহীন ও অঞ্চলের জন্য অস্থিতিশীলতার হুমকি।” একইসঙ্গে তিনি আঞ্চলিক শান্তি রক্ষায় সংযমের আহ্বান জানান।
পাকিস্তান সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা আক্রমণের জন্য প্রস্তুত এবং প্রয়োজনে উপযুক্ত জবাব দেবে।