তরফদার মামুন, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের হিসাবরক্ষক তারেক আহমদ চৌধুরীকে সুনামগঞ্জে বদলি করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। সরকারি অর্থ আত্মসাৎ, ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে অর্থ লোপাট এবং নারী সহকর্মীদের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগে তদন্ত শেষে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
রোববার (৪ মে) সিলেট বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার শাখা থেকে জারি করা আদেশে বদলির বিষয়টি জানানো হয়। জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা বেগম শামীমা খন্দকার নিশ্চিত করেছেন যে আদেশ হাতে পেয়েছেন এবং তা কার্যকর করা হচ্ছে।
তারেক আহমদ ২০০৩ সালে সহকারী হিসাবরক্ষক হিসেবে মৌলভীবাজার জেলা পরিষদে যোগদান করেন। জানা যায়, চাকরিতে যোগদানের আগে তিনি ডিশলাইনের লাইনম্যান হিসেবে কাজ করতেন। কিন্তু চাকরিতে ঢোকার পরই তার জীবনযাত্রায় আসে অস্বাভাবিক পরিবর্তন সিলেট শহরে ফ্ল্যাট, শ্রীমঙ্গলে জমি, স্ত্রীর নামে এফডিআর ও ব্যাংক ব্যালেন্সের মতো বিপুল সম্পদের মালিক হন তিনি।
অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, ভুয়া বিল-ভাউচার তৈরি, সরকারি প্রকল্পের নামে টাকা আত্মসাৎ, রাজস্ব কোষাগারে অর্থ জমা না দেওয়াসহ একাধিক অনিয়মে জড়িত ছিলেন তারেক। শুধু তাই নয়, অফিসে বসেই সিগারেট খাওয়া, সহকর্মীদের মারধর এবং নারী প্রশিক্ষণার্থীদের হয়রানির অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
বিশেষভাবে আলোচিত হয় জেলা পরিষদের এক নারী কর্মচারীর সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। সেই সঙ্গে আরও অভিযোগ রয়েছে, প্রশিক্ষণে আসা মেয়েদের নানা অজুহাতে বিরক্ত করা হতো তার পক্ষ থেকে।
দুর্নীতির এসব খবর বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর বিষয়টি তদন্তে নামে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। প্রাথমিক তদন্তেই তার বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগের সত্যতা মেলে।
তবে বদলিকে অনেকে এই ঘটনার যথাযথ পরিণতি মনে করছেন না। স্থানীয় সচেতন মহলের দাবি, বদলি নয় প্রয়োজন ছিল কঠোর শাস্তির, যাতে প্রশাসনে দুর্নীতির স্থান না থাকে।