নিজস্ব প্রতিবেদক:
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার মধ্যে শুক্রবার টোকিওতে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে ৬টি সমঝোতা স্মারক সই হয় এবং বাংলাদেশকে বাজেট সহায়তা ও রেলপথ উন্নয়নের জন্য ১.০৬৩ বিলিয়ন ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় জাপান।
বৈঠকে জাপান বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থনের আশ্বাস দেয় এবং রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি জানায়। পরে যৌথভাবে প্রকাশিত বিবৃতিতে বৈঠকের মূল ৯টি বিষয়ের সারসংক্ষেপ তুলে ধরা হয়।
যৌথ বিবৃতির মূল বিষয়সমূহ:
১. ৩০ মে টোকিওতে ড. ইউনূস ও শিগেরু ইশিবার বৈঠক হয়।
২. উভয় দেশ দীর্ঘস্থায়ী বন্ধুত্ব ও কৌশলগত অংশীদারিত্ব পুনর্ব্যক্ত করে। তারা ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতার লক্ষ্যে কাজ করার অঙ্গীকার করে।
৩. প্রধানমন্ত্রী ইশিবা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি সমর্থন জানান এবং ইউনূস মহেশখালী-মাতারবাড়ি (MIDI) ও BIG-B প্রকল্পে জাপানের সহায়তার প্রশংসা করেন।
৪. জয়দেবপুর-ঈশুরদী ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন নির্মাণসহ অর্থনৈতিক সংস্কার ও জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতার জন্য ঋণ সহায়তা স্বাগত জানানো হয়।
৫. জাপানি বিনিয়োগ বাড়াতে ওএসএস সিস্টেম, প্রি-পেইড গ্যাস মিটার, তথ্য সুরক্ষা প্রকল্পসহ বেশ কিছু সমঝোতা স্বাক্ষরিত হয়। অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তির (EPA) আলোচনায় গতি আনার বিষয়ে দুই দেশ একমত হয়।
৬. নিরাপত্তা সহযোগিতা জোরদারে বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে পাঁচটি টহল নৌকা দ্রুত সরবরাহ এবং প্রতিরক্ষা চুক্তি চূড়ান্ত করার অঙ্গীকার করা হয়।
৭. মানবসম্পদ ও সাংস্কৃতিক বিনিময় জোরদারে একমত হন দুই নেতা।
৮. রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানে জাপান ও বাংলাদেশের যৌথ প্রয়াসের কথা পুনর্ব্যক্ত করা হয়।
৯. ড. ইউনূস জাপানের আন্তরিক আতিথেয়তার জন্য কৃতজ্ঞতা জানান এবং প্রধানমন্ত্রী ইশিবাকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।
বৈঠক শেষে ফেসবুকের মাধ্যমে প্রেস উইং যৌথ বিবৃতিটি প্রকাশ করে। এতে স্পষ্টভাবে বোঝা যায়, বাংলাদেশ-জাপান সম্পর্ক আরও গভীর ও কৌশলগত পর্যায়ে এগিয়ে যাচ্ছে।