নিজস্ব প্রতিনিধি:
স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে নয় ধরনের পণ্য আমদানিতে নতুন নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ভারত। এর ফলে পোশাকশিল্পের পর এবার পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানিতে বড় ধাক্কা আসার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সিদ্ধান্তে বাংলাদেশই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য অধিদপ্তর শুক্রবার (২৭ জুন) এক বিজ্ঞপ্তিতে স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি নিষিদ্ধ করা পণ্যগুলোর তালিকা প্রকাশ করেছে। এতে কাঁচাপাট, পাটের সুতা, পাটের রোল, একক শণ সুতা ও বিশেষ ধরনের কাপড়সহ মোট নয়টি পণ্য অন্তর্ভুক্ত। তবে মুম্বাইয়ের নহ্ভা সেভা বন্দর দিয়ে এসব পণ্য আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশনের ডিরেক্টর শেখ শামসুল আবেদিন বলেন, “স্থলবন্দর দিয়ে কাঁচাপাট রফতানি বন্ধ হতে পারে, তবে নৌপথে রফতানি চালু রাখার চেষ্টা চলছে।” তিনি জানান, গত মার্চে ভারতসহ ১২ দেশে ৬৯৮ কোটি টাকার কাঁচাপাট রফতানি হয়েছে, যার ৪৪৮ কোটি টাকাই শুধু ভারতে গেছে—প্রায় সবটাই স্থলবন্দর দিয়ে।
বাণিজ্য বিশ্লেষক মোস্তফা আবিদ খান বলেন, “স্থলবন্দর বন্ধ হলে নৌপথে রফতানি বাড়ানো কঠিন হবে। পোশাকের পর পাট রফতানিও সংকটে পড়তে পারে।” গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভারতে বাংলাদেশের মোট রফতানির ৩.৭৫% (১৫৭ কোটি ডলার) ছিল পাট ও পাটজাত পণ্য। অন্যদিকে, ভারত থেকে বাংলাদেশ ৯০০ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করে।
সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “রাজনৈতিক টানাপোড়েনের কারণে এই নিষেধাজ্ঞা আসছে। আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা উচিত।” গত তিন মাসে এটিই ভারতের তৃতীয় নিষেধাজ্ঞা। এর আগে মে মাসে পোশাক ও এপ্রিলে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করা হয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এখনো এই বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নৌবন্দর দিয়ে রফতানি বাড়ানো এবং অভ্যন্তরীণ পাটশিল্পের উৎপাদন বাড়ানোর উপর জোর দেওয়া হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত বছর আগস্টে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে টানাপোড়েন শুরু হওয়ার পর থেকে দুই দেশই একে অপরের বিরুদ্ধে একাধিক বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। বিশেষজ্ঞরা দ্রুত এই সংকট সমাধানের উপর জোর দিচ্ছেন।