১৬ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১লা শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২১শে মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

ঈশ্বরদী সরকারী কলেজের খন্ডকালীন শিক্ষকের স্বেচ্ছাচারিতায় ডুবতে বসেছে সুনাম

রিফাজ বিশ্বাস লালন, ঈশ্বরদী প্রতিনিধি:

ঐতিহ্যবাহী ঈশ্বরদী সরকারী কলেজের একাধিক খন্ডকালীন শিক্ষকের স্বেচ্ছাচারীতায় ডুবতে বসেছে কলেজের অর্জিত সুনাম। প্রতিষ্ঠানটির হাজারো শিক্ষার্থীদের কোচিং বাণিজ্যে জিম্মি করে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। যার প্রভাব পড়েছে এবারের ইয়ার চেঞ্জ পরীক্ষায়। কলেজের কতিপয় শিক্ষকের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে খন্ডকালীন ওই সমস্ত শিক্ষকেরা শিক্ষার্থীদের চরম ভাবে জিম্মি করেছেন। তাদের কাছে কোচিং অথবা প্রাইভেট না পড়লে পরীক্ষায় এবং ব্যবহারিক খাতায় নাম্বার না দেওয়ার হুমকি দেন বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।

সুত্র জানায়, এবারের ইয়ার চেঞ্জ পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৩৯৯ জন শিক্ষার্থী অংশ গ্রহণ করে। যার মধ্যে পাস করে মাত্র ৬১ জন শিক্ষার্ধী। একই অবস্থা বাণিজ্য ও মানবিক শাখাও। খোজ নিয়ে জানা যায়, বাণিজ্য শাখায় মোট ২৯৭ জন শিক্ষার্থী অংশ নিলেও পাশ করে মাত্র ৮৬ জন আর মানবিক শাখায় ২৯০ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাশ করে মাত্র ৩৫ জন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, কলেজের কিছু শিক্ষক ও খন্ডকালীন শিক্ষকদের কাছে প্রাইভেট বা কোচিং না করার কারণে তারা ওই সমস্ত বিষয়ে ফেল করিয়ে দিয়েছেন। শিক্ষার্থীরা সুনির্দ্দিষ্ট ভাবে কলেজের খন্ডকালীন শিক্ষক মেহেদী হাসান সুজনের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তোলেন।

তারা বলেন, সুজন স্যারের কাছে প্রাইভেট বা কোচিং না করলে তিনি কাউকে নাম্বার দেন না। যার প্রমাণ এবারের ইয়ার চেঞ্জ পরীক্ষা। তার পদার্থ ও আইসিটিতে বেশিরভাগ শিক্ষার্থীকে ফেল করিয়েছেন তিনি এমনকি তার শ্যালিকাকে ওই বিষয়ে প্রথম স্থান করে দিয়েছেন বলেও গুঞ্জন রয়েছে। যদিওবা তার শ্যালিকা অন্য বিষয়ে করুন ভাবে ফেল করেছেন। এই বিষয়টি জানাজানি হলে কলেজ চত্বরে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

খোজ নিয়ে জানা গেছে, পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সরকারের প্রভাবশালী নেতাদের সুপারিশে সরকারী কলেজের মত একটি প্রতিষ্ঠানে খন্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। সেই সময় পতিত আওয়ামীলীগের সকল ধরণের কর্মসূচীতে বলিষ্ঠ ভাবেই দ্বায়িত্ব পালন করেন তিনি।

কলেজে যোগদান করেই সুজন স্যার প্রাইভেট বাণিজ্যে মেতে উঠেন। তার কাছে না পড়লে তিনি পরীক্ষায় বা ব্যবহারিক খাতায় নাম্বার না দেওয়ার হুমকি দেন। এই ভয়ে শিক্ষার্থীরা তার কাছে হুমড়ি খেয়ে প্রাইভেট পড়তে শুরু করে। সেখান থেকে তিনি আয় করেন লাখ লাখ টাকা। তাকে এই কাজে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগীতা করে কলেজ এরই কতিপয় শিক্ষক। সম্প্রতি তার কাছে প্রাইভেট এর শিক্ষার্থী সংখ্যা কমে যাওয়ায় তাদের ফেল করিয়েছেন কৌশলে এমন অভিযোগ করেন তারা।

এবিষয়ে পরীক্ষা কমিটির প্রধান শফিকুল ইসলাম জানান, শিক্ষার্থীদের কারণে এবার রেজাল্ট বেশ খারাপ হয়েছে। তবে তাদের সবাইকেই কৃতকার্য করে সেকেন্ড ইয়ারে ইন্নতি করে দেয়া হয়েছে।
কলেজের সদ্য যোগাদানকৃত অধ্যক্ষ মোঃ আমজাদ হোসেন জানান, বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই শিক্ষক কাউন্সিলের সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এরকম কোন শিক্ষকের বিরুদ্ধে সুনিদ্দিষ্ট অভিযোগ আসলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top