মাহফুজুর রহমান মাসুম, উজিরপুর বরিশাল প্রতিবেদক:
প্রকৃত জ্ঞানের জন্যই শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। লেখাপড়া করে জ্ঞান অর্জন করে পরীক্ষায় পাস করতে হবে। গণহারে পাস নয় আমরা চাই শিক্ষার গুণগতমান। “শিক্ষা শুধু পরীক্ষার ফল নয়, এটি একটি প্রজন্ম গড়ার নির্মাণ প্রক্রিয়া। সেই প্রক্রিয়াকে শুদ্ধ ও গুণগত করতে হলে আমাদের প্রতিটি স্তরে একসাথে কাজ করতে হবে”-এমনই দিকনির্দেশনামূলক বার্তা দিলেন উজিরপুর উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আলী সুজা।
৪ আগস্ট ২০২৫, সোমবার সকাল ১০ টা থেকে উজিরপুর উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে একদিনে ধারাবাহিকভাবে অনুষ্ঠিত হলো তিনটি শিক্ষামূলক কর্মসূচি।
উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এ.বি.এম. জাহিদ এর সভাপতিত্ব প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আলী সুজা সময় আরো বক্তব্য রাখেন সরকারি ডব্লিউ বি ইউনিয়ন মডেল ইনস্টিটিউট এর প্রধান শিক্ষক মোঃ শাহ আলম, দোসোতিনা আহ: ফাজিল (ডিগ্রী) মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোঃ সিদ্দিক উল্লাহ, হাবিবপুর বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মনিরুজ্জামান,বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ জাকারিয়া মাস্টার, বড়াকোঠা ইউনিয়ন ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষিকা মারুফা খানম বিউটি, জয়শ্রী মুণ্ডপাসা এসএ বিএন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ সেকেন্দার আলী,সোনারবাংলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তারিক মোহাম্মদ আল মামুন, হারতা স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ বানীকান্ত হালদারসহ অন্যান্যরা।
এসময় অনুষ্ঠানে উপজেলার ৫২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক/অধ্যক্ষ সহ ছাত্র-ছাত্রী বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এ সময় বক্তারা বলেন, “গুণগত শিক্ষা শুধু সংখ্যাগত নয়—এই উপলব্ধি থেকেই আমাদের প্রতিটি কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে।”
ইউএনও তুলে ধরেন শিক্ষার মৌলিক দিক, সামাজিক চ্যালেঞ্জ এবং ভবিষ্যৎ করণীয়। তিনি আরো বলেন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় সচেতনতাই মূল হাতিয়ার।
অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, ইভটিজিং ও বাল্যবিবাহ বিরোধী সচেতনতামূলক আলোচনা তুলে ধরেন। এ সময় ইউএনও আরো বলেন, “আমরা যখন দেখি একজন মেধাবী শিক্ষার্থী নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে বা সামাজিক সহিংসতায় জড়িয়ে যায়, তখন বুঝতে পারি কোথাও আমাদের অভিভাবক, শিক্ষক ও প্রশাসনের সম্মিলিত দায়িত্বে ঘাটতি ছিল।”
তিনি আরও বলেন, “শুধু আইন প্রয়োগ নয়, শিশুদের মনোজগতে সচেতনতার বীজ বপন করতে না পারলে আমরা হারাবো ভবিষ্যতের নির্মাতা প্রজন্মকে।” তিনি আরো একটি সভায় বলেন কর্মমুখী শিক্ষাই ভবিষ্যতের চাবিকাঠি “বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমাদের সন্তানরা যদি কেবল পাঠ্যপুস্তকের জ্ঞানেই সীমাবদ্ধ থাকে, তাহলে তারা চাকরি খুঁজবে; কিন্তু কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারবে না। কারিগরি শিক্ষা হল আত্মনির্ভরতার সোপান।”
তিনি অভিভাবকদের অনুরোধ করেন, সন্তানদের ভবিষ্যৎ ভাবনায় কেবল জিপিএ নয়, বাস্তব দক্ষতার বিষয়েও সমান গুরুত্ব দিতে।
এ সময়ে এই কর্মকর্তা ছাত্র শিক্ষক ও অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে বলেন “২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষায় আমাদের প্রত্যাশিত ফলাফল হয়নি-এর দায় কার?” এই প্রশ্ন থেকেই শুরু হয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের সঙ্গে ফল বিশ্লেষণ ও ২০২৬ সালের জন্য রূপরেখা নির্ধারণ।
তিনি বলেন, “সমস্যা চিহ্নিত না করলে সমাধান কখনো সম্ভব নয়। আমরা চাই প্রতিটি স্কুল নিজের অবস্থান বিশ্লেষণ করুক, যেখানে ঘাটতি ছিল, সেখান থেকে নতুন করে সফলতা বয়ে আনুক। অনুষ্ঠান শেষে শিক্ষার গুণগত মান ও সম্মানজনক ফলাফলের উদ্দেশ্য একটি যৌথ অঙ্গীকারের ব্যবস্থা করেন এই নির্বাহী কর্মকর্তা।