আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৩৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বুধবারের হিসাবে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬১ হাজার ১৫৮ জনে। বার্তা সংস্থা আনাদোলু এ খবর নিশ্চিত করেছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, গত একদিনে ৭৭১ জন নতুন আহত হয়েছেন, যা মোট আহতের সংখ্যা বাড়িয়ে ১ লাখ ৫১ হাজার ৪৪২ জনে পৌঁছেছে। অনাহার ও অপুষ্টিজনিত কারণে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে এখন ১৯৩ জন হয়েছে, যাদের মধ্যে ৯৬ জনই শিশু।
মানবিক সহায়তা নিতে গিয়েও ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ত্রাণ সংগ্রহকালে ৮৭ জন নিহত এবং ৫৭০ জন আহত হয়েছেন। ২৭ মে থেকে এ পর্যন্ত সহায়তা নিতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৬৫৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন এবং ১১ হাজার ৮০০ জন আহত হয়েছেন।
ইসরাইলের ১৮ বছর ধরে চলা অবরোধ এবং চলতি বছরের ২ মার্চ থেকে সব ক্রসিং বন্ধ করে দেওয়ায় গাজায় মানবিক সংকট চরমে পৌঁছেছে। গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, গত ১০ দিনে মাত্র ৮৪৩টি ত্রাণ ট্রাক প্রবেশ করতে পেরেছে, যা দৈনন্দিন চাহিদা মেটাতে প্রয়োজনীয় ৬ হাজার ট্রাকের তুলনায় নগণ্য।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার জবাবে ইসরাইল গাজায় ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে। ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা এ সংঘাতে গত ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও ১৮ মার্চ থেকে ইসরাইল ফের হামলা শুরু করে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ইতিমধ্যে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ইসরাইলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলাও চলছে।
গাজার বেসামরিক জনগণের ওপর চলমান এই হামলা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ও মানবিক সহায়তা প্রবেশের পথ উন্মুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছে।