জাহেদুল ইসলাম আল রাইয়ান:
কায়রোর আকাশে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে পড়ল আন্তর্জাতিক ইফতা সম্মেলনের দশম অধিবেশনের সমাপনী দিনে। বুধবার, ১৩ আগস্ট ২০২৫, মিশরের ওয়াক্ফ মন্ত্রী প্রফেসর ড. ওসামা আল-আযহারি উপস্থিত ছিলেন এই মর্যাদাপূর্ণ অনুষ্ঠানে, যা বিশ্বের বিভিন্ন ইফতা সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের সাধারণ সচিবালয়ের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়। এবারের সম্মেলনের শিরোনাম ছিল – “কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুগে বিচক্ষণ মুফতি তৈরির শিল্প”।
মন্ত্রী ড. ওসামা আল-আযহারির অংশগ্রহণ ছিল মিশরীয় রাষ্ট্রের ধারাবাহিক প্রচেষ্টার প্রতীক, যা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে মিলিতভাবে ফতোয়া প্রদানের ভাষা ও কাঠামোকে আধুনিকায়ন, যুগের পরিবর্তনের সাথে সঙ্গতি রেখে এগিয়ে নেওয়া এবং আধুনিক প্রযুক্তিকে শরীয়তের আলোচনায় সুফলময়ভাবে প্রয়োগ করার দিকে নিবেদিত। একই সাথে তিনি জোর দিয়ে বলেন, আল-আযহারের মধ্যপন্থী, আলোকিত পদ্ধতি এই সংস্কারের কেন্দ্রে থাকতে হবে।
সমাপনী অধিবেশনে জেনেভাভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংসদের মহাসচিবের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা বিশেষভাবে ড. ওসামা আল-আযহারির প্রশংসা করেন। তিনি উল্লেখ করেন, তাঁর রচনা “আল-হাক্কুল মু’বিন ফি রদ্দি ‘আলা মান তালা’বা বিদ্দীন” (যারা ধর্ম নিয়ে ছলনা করে তাদের জবাবে স্পষ্ট সত্য) আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। এই গ্রন্থ শুধু বৈশ্বিক পর্যায়ে চরমপন্থী চিন্তাধারার মোকাবেলায় সহায়ক হয়নি, বরং ঘৃণামূলক বক্তব্য থেকে সমাজকে রক্ষার ক্ষেত্রেও কার্যকর ভূমিকা রেখেছে।
অধিবেশন শেষে ঘোষিত হয় বেশ কয়েকটি সুপারিশ, যা শুধু এই সম্মেলনের ফলাফলকে শক্তিশালী করবে না, বরং গবেষণা, আলোচনাসভা এবং ভবিষ্যতের কার্যক্রমের নতুন দ্বারও খুলে দেবে।
নীল নদের তীরের এই আন্তর্জাতিক মিলনমেলায় প্রতিধ্বনিত হলো একটি বার্তা—ইসলামী ফতোয়ার জগৎকে প্রযুক্তির যুগে আরও প্রজ্ঞাময়, সুসংগঠিত এবং বিশ্বমুখী করে তুলতে এখনই সময় ঐক্যবদ্ধ উদ্যোগের।