১৮ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২রা কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৬শে রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

নীলফামারীর ১০ কলেজে এইচএসসিতে শূন্য পাস

মো. সাইফুল ইসলাম, নীলফামারী প্রতিনিধি:

চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় দিনাজপুর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অধীনে নীলফামারী জেলার ১০টি কলেজে শতভাগ শিক্ষার্থীই অকৃতকার্য হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মীর সাজ্জাদ হোসেন স্বাক্ষরিত এক সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মহা. তৌহিদুল ইসলাম জানান, ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় বোর্ডের অধীনে ৪৩টি কলেজের ১৮২ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিলেও কেউই পাস করতে পারেনি। এর মধ্যে নীলফামারীর ১০টি কলেজের ৪০ জন শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছে। এছাড়া জেলার আরও একটি কলেজের ৪ জন পরীক্ষার্থী ফরম পূরণ করলেও পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিল।

নীলফামারী সদর উপজেলার লক্ষ্মীচাপ সৃজনশীল কলেজের মানবিক বিভাগের ১ জন, সৈয়দপুরের সাতপাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের ১ জন, কিশোরীগঞ্জের নয়নখাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৫ জন, জলঢাকার বগুলাগাড়ী স্কুল অ্যান্ড কলেজের ১৫ জন, চেওড়াডাঙ্গী স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৬ জন ও গোলমুন্ডা আদর্শ কলেজের ৩ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েও কেউ পাস করতে পারেনি।

এছাড়া ডিমলা উপজেলার জেলা পরিষদ স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের ১ জন ও মানবিক বিভাগের ১ জন, নাউতারা বালিকা স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৩ জন, ডিমলা সীমান্ত কলেজের ২ জন এবং গয়াখড়িবাড়ি মহিলা কলেজের ২ জন শিক্ষার্থীও অকৃতকার্য হয়েছে।

অন্যদিকে ডিমলা আদাবাড়ী স্কুল অ্যান্ড কলেজের মানবিক বিভাগের ৪ জন পরীক্ষার্থী ফরম পূরণ করলেও পরীক্ষায় অংশ নেয়নি, ফলে প্রতিষ্ঠানটির ফলাফলও শূন্য হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।

নীলফামারী জেলা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর জেলায় মোট ৯৩টি কলেজের ১২ হাজার ১৮৯ জন শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে ৭ হাজার ৫২৪ জন উত্তীর্ণ হয়েছেন, পাসের হার ৬১ দশমিক ৭৩ শতাংশ।

এ বছর জেলায় জিপিএ-৫ অর্জন করেছে ৯৮১ জন শিক্ষার্থী। লিঙ্গভিত্তিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মেয়ে শিক্ষার্থী ৬ হাজার ৪৩৬ জনের মধ্যে পাস করেছে ৪ হাজার ২৪৭ জন। ছেলে শিক্ষার্থী ৫ হাজার ৭৫৩ জনের মধ্যে পাস করেছে ৩ হাজার ২৭৭ জন।

দিনাজপুর বোর্ডের অধীনে থাকা অন্যান্য সাত জেলার মধ্যেও বেশ কিছু কলেজে শূন্য পাসের নজির পাওয়া গেছে। এর মধ্যে কুড়িগ্রামের ৯টি কলেজের ৫৪ জন, ঠাকুরগাঁওয়ের ৬টি কলেজের ২৫ জন, লালমনিরহাটের ৫টি কলেজের ১৪ জন, রংপুরের ৪টি কলেজের ১৫ জন, দিনাজপুরের ৪টি কলেজের ১৭ জন, পঞ্চগড়ের ৩টি কলেজের ১১ জন এবং গাইবান্ধার ২টি কলেজের ৬ জন পরীক্ষার্থী কেউই পাস করতে পারেনি।

শিক্ষাবিদরা বলছেন, এই ফলাফল স্থানীয় পর্যায়ের শিক্ষা ব্যবস্থার মান, শিক্ষক সংকট, এবং শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় অনাগ্রহের চিত্র স্পষ্ট করছে। এ বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে আগামী বছরগুলোতেও একই ধারা অব্যাহত থাকতে পারে।

দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর তৌহিদুল ইসলাম বলেন, “শূন্য পাস পাওয়া কলেজগুলোর একাডেমিক কার্যক্রম ও পাঠদান পদ্ধতি খতিয়ে দেখা হবে। বোর্ড ইতোমধ্যে এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিশেষ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।”

 

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top