১৪ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩০শে শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২০শে সফর, ১৪৪৭ হিজরি

ভেড়ামারা-হাদল সড়ক এখন নরক : জনদুর্ভোগ চরমে

খালিদ হোসেন হৃদয়, পাবনা প্রতিনিধি

পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার পার-ভাঙ্গুড়া ইউনিয়নের ভেড়ামারা থেকে ফরিদপুর উপজেলার হাদল পর্যন্ত সড়কটি বেহাল হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন সংস্কারবিহীন এই সড়কটির ওপর দিয়ে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন শত শত মানুষ ও যানবাহন। এই দুরবস্থার কারণে এলাকাবাসীর দৈনন্দিন জীবনযাত্রা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ২০১২ সালে প্রায় এক কোটি টাকা ব্যয়ে এই সড়কটি নির্মাণ করে। রাস্তার মোট দৈর্ঘ্য ছিল তিন কিলোমিটার।

নির্মাণের অল্প কিছুদিনের মধ্যেই সড়কটির বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দেয় এবং এরপর একে একে পুরো রাস্তাটিই ভেঙে পড়ে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, নির্মাণের সময় নিম্নœমানের সামগ্রী ব্যবহারের কারণে সড়কটি বেশিদিন টেকসই হয়নি। নির্মাণের তিন থেকে চার বছরের মধ্যেই এটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে যায় সড়কটি।

বর্তমানে সড়কটির অধিকাংশ অংশেই বড় বড় গর্ত, ভাঙাচোরা খোয়া এবং কোথাও কোথাও কাঁচা মাটির মতো হয়ে গেছে। বর্ষাকালে এসব গর্তে পানি জমে চলাচল একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়। এমনকি শুকনো মৌসুমেও এই রাস্তায় চলতে গিয়ে যানবাহনের চালক ও যাত্রীরা পড়ে যান চরম ঝুঁকিতে।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে শিক্ষার্থী, কৃষক, ব্যবসায়ী, রোগীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ চলাচল করেন। এলাকাবাসী অবিলম্বে রাস্তাটি সংস্কারের দাবি জানিয়ে বলেন, একটি রাস্তা এলাকার জীবনমানের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় এতদিন ধরে কোনো সংস্কার না হওয়া দুঃখজনক।

হাটগ্রামের বাসিন্দা মো. আব্দুল কাদের বলেন, এই রাস্তা দিয়ে বাজারে যেতে প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় নষ্ট হয়। রোগী নিয়ে হাসপাতালে যেতে হলে আরও সমস্যা হয়। এমনকি গর্ভবতী নারীদের নিয়ে যেতে অনেক সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি হয়। সড়কটি এখন নরকে পরিণত হয়েছে।
একই এলাকার শিক্ষার্থী মাহি আক্তার বলেন, প্রতিদিন স্কুলে যেতে আমাদের খুব কষ্ট হয়। গাড়ি পাওয়া যায় না, আর পেলেও রাস্তায় এত গর্ত যে গাড়ি প্রায় বন্ধ হয়ে যায়।

গাড়ি চালকদের অভিজ্ঞতাও ভয়াবহ। স্থানীয় সিএনজি চালক রফিকুল ইসলাম বলেন, এই রাস্তায় চলাচল করতে গিয়ে প্রতিদিন আমাদের গাড়ির চাকা, যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যায়। যাত্রী নিয়ে যেতে ভয় লাগে, দুর্ঘটনা হলে দায় নেবে কে?

পার-ভাঙ্গুড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হেদায়েতুল হক রাস্তার দূরাবস্থার কথা স্বীকার করে বলেন, সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বারবার জানানো হলেও এখনো কোনো সংস্কার কাজ শুরু হয়নি।

এ বিষয়ে প্রসঙ্গে উপজেলা প্রকৌশলী মো. রবিউল ইসলাম বলেন, আমি নিজে সড়কটি পরিদর্শন করেছি। আমরা সড়কটি সংস্কারের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। প্রকল্প অনুমোদন হলে দ্রুত সড়কটির কাজ শুরু করা হবে।

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top